• বাংলার বাড়িতে ‘নো–এন্ট্রি’ পঞ্চায়েত নেতাদের, সতর্ক নবান্নের
    এই সময় | ০৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • কেন্দ্রীয় আবাস যোজনার মতো বাংলার বাড়ি প্রকল্প রূপায়ণে যাতে কোনও রকম দুর্নীতির অভিযোগ না ওঠে তার জন্যে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিল নবান্ন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান এবং নির্মাণ সহায়কদের বিরুদ্ধে। সে কথা মাথায় রেখে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের কোনও ভাবেই নাক গলাতে দেওয়া হচ্ছে না।

    পঞ্চায়েতের আধিকারিকদেরও দূরে রাখা হচ্ছে। পুরো দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে বিডিওদের হাতে। সেই সঙ্গেই যাঁরা বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ইতিমধ্যে টাকা পেয়েছেন তাঁরা ঠিকমতো বাড়ি বানাচ্ছেন কিনা, তার উপরে নজর রাখতেও বলা হয়েছে বিডিওদের। কাজ শেষের জন্যে নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এর অন্যথা হলেই ব্যবস্থা নেবেন বিডিওরা।

    প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় গ্রামে বাড়ি তৈরি করা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরে দফায় দফায় রাজ্যে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। তাদের রিপোর্টে উঠে এসেছিল, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকলেও অনেকে বাড়ি না বানিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে আদৌ বাড়ি তৈরি হচ্ছে কিনা, তার উপরে নজর রাখতে বলা হয়েছে বিডিওদের। এর জন্যে নিয়মিত ইনস্পেকশন করবেন ব্লক আধিকারিকরা। ঘরের ছবিও তুলে রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট উপভোক্তার কাছে কেউ টাকা দাবি করছেন কিনা, সে বিষয়েও খোঁজখবর নিচ্ছেন ব্লক আধিকারিকরা।

    নবান্নের নির্দেশ, যাঁরা প্রথম দফায় টাকা পেয়েছেন তাঁদের আগামী এপ্রিলের মধ্যে বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। জানুয়ারির মধ্যে লিনটন ঢালাই শেষ করতে হবে। অন্যথায় তাঁদের নোটিস ধরানো হবে। কেউ ইচ্ছা করে টাকা ফেলে রাখলে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করবেন বিডিও।

    তবে এত কড়াকড়ির পরেও নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করা যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে বিডিওরা। হাওড়া গ্রামীণের এক ব্লক আধিকারিকের কথায়, ‘এক–একটা গ্রাম পঞ্চায়েতে গড়ে ১৫০–২০০টি বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বাড়ির জন্যে অন্তত এক জন রাজমিস্ত্রি এবং দু’জন হেল্পার লাগবে। এম‍নিতেই গ্রামের দিকে এখন ধান ও সব্জি চাষ চলছে। এ সময়ে একসঙ্গে এত রাজমিস্ত্রি পাওয়া মুশকিল। তা ছাড়া বাজারে ইট–বালির জোগানও কম রয়েছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা মুশকিল হবে।’

    হুগলির এক ব্লক আধিকারিক আবার জানাচ্ছেন, বাংলার বাড়ি প্রকল্পে পঞ্চায়েত সদস্যদের যুক্ত না করায় তাঁরা ঠিকমতো সহযোগিতা করছেন না। ফলে কিছু কিছু জায়গায় কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘পঞ্চায়েত সদস্যদের সব কাজে যুক্ত থাকতে হবে, এমন কোনও ব্যাপার নেই। পদাধিকারে বিডিওরা পঞ্চায়েত সমিতির সিইও। আমরা চাই, কাজটা যাতে ঠিকঠাক হয় এবং সময়ের মধ্যে শেষ হয়।’

  • Link to this news (এই সময়)