দিনের বেশিরভাগ সময়টাই কাটত ওদের সঙ্গে। পরিবারের অন্যতম সদস্য ছিল দুটি কাকাতুয়া। বৃহস্পতিবার সকালে এদের মধ্যেই একটি পাখি পুকুরে পড়ে যেতেই তার প্রাণ বাঁচাতে জলে ঝাঁপ দেন চন্দ্রকোনা থানার জাড়া গ্ৰামের বাসিন্দা শ্রীরাম রুইদাস (৩৮)। পাখিটির প্রাণ বাঁচানো যায়নি। পোষ্যের প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। মর্মান্তিক ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়।
সামান্য চাষবাস ও দিনমজুরির কাজ করতেন শ্রীরাম। বাড়িতে স্ত্রী ও তিন মেয়ে আছেন। অভাবের সংসার হলেও পাখি পোষার শখ ছিল তাঁর। কলকাতা থেকে কিনে এনেছিলেন দু'টি কাকাতুয়া। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে ওই কাকাতুয়া পাখি দু'টিকে স্নান করাতে নিয়ে গিয়েই বিপত্তি ঘটে।
খাঁচা থেকে বেরিয়ে পড়ে একটি কাকাতুয়া। পাখিটি পুকুরের জলে পড়ে যায়। শখের পাখিকে বাঁচাতে শ্রীরামও ঝাঁপ দেন পুকুরে। কাকাতুয়ার পেছন পেছন সাঁতরে পুকুরের এক পাড় থেকে অন্য পাড়ে পৌঁছে শ্রীরাম দেখেন পোষ্য পাখিটি মারা গিয়েছে। দীর্ঘক্ষণ সাঁতারের ফলে তিনিও অনেকটাই হাঁপিয়ে উঠেছিলেন। হঠাৎই প্রতিবেশীরা দেখেন, জলের মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছেন শ্রীরাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই জলে তলিয়ে যান তিনি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘পুকুরে কাকাতুয়ার মৃতদেহ দেখার পরই তলিয়ে গেল শ্রীরাম। দিন-রাত ওদের নিয়েই থাকতো যে।’ তাঁকে বাঁচানোর জন্য পাড়ার লোকজন এগিয়ে যায় এবং বেশ কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু, বিশাল পুকুরে তলিয়ে যাওয়ায় আর খুঁজে পাওয়া যায়নি তাঁকে। শেষমেশ খবর দেওয়া হয় পুলিশ-প্রশাসন ও ডুবুরিদের। বিকেল নাগাদ পুকুরে নামে NDRF-র একটি টিম। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ NDRF-র টিম শ্রীরাম রুইদাসের মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঘটনায় শোকস্তব্ধ পরিবারের সদস্যরা।