চম্পক দত্ত: কী বলা চলে একে? কাকাতুয়া-ট্র্যাজেডি? আজ, বৃহস্পতিবার এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল পশ্চিম মেদিনীপুরে। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা থানার জাড়া গ্ৰামের রুইদাস পাড়া এলাকায় পাখিকে বাঁচাতে গিয়ে তলিয়ে গেলেন এক ব্যক্তি। কী ঘটল?
জানা গিয়েছে, শ্রীরাম রুইদাস নামের বছর পঁয়তিরিশের এক ব্যক্তি তাঁর বাড়িতে দুটি কাকাতুয়া পুষেছিলেন। আজ সকালে বাড়ির পাশের এক পুকুরে ওই কাকাতুয়া পাখিদুটিকে স্নান করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময়ে খাঁচা থেকে বেরিয়ে জলে পড়ে যায় একটি কাকাতুয়া। পাখিটিকে বাঁচাতে পরনে থাকা শীতের পোশাক এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাড়ে খুলে রেখে তিনি সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপ দেন পুকুরে। পুকুরের এক পাড় থেকে অন্য পাড়ের কাছাকাছি জায়গায় গিয়ে পৌঁছন তিনি। সেইখানে গিয়ে দেখেন কাকাতুয়া পাখিটি ততক্ষণে মারা গিয়েছে। পাখিটিকে জল থেকে তুলে নিয়ে পাড় দিয়ে না ফিরে যুবকটি ফের পুকুরের জল পেরিয়েই উল্টোদিকের পাড়ে ফিরছিলেন।
আর তখনই ঘটে বিপত্তি! ফেরার সময়ে কোনও কারণে তাঁর দমের অভাব ঘটেছিল হয়তো। বা অন্য কিছু। কী ঘটেছিল, পরিষ্কার জানা যাচ্ছে না। হঠাৎ পাড়া-প্রতিবেশী লোকজন দেখেন, যুবকটি পুকুরের জলে হাবুডুবু খাচ্ছেন। হাবুডুবু খেতে-খেতেই তলিয়ে যান তিনি। তাকে বাঁচানোর জন্য পাড়ার লোকজন এগিয়ে যান এবং বেশ কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজিও করেন। কিন্তু কোনও লাভ হয় না। তাঁকে পাওয়া যায় না।
অবশেষে খবর দেওয়া হয় চন্দ্রকোনা থানায়। পুলিস খবর দেয় সিভিল ডিফেন্স। দুপুর নাগাদ ডুবুরি নামিয়ে নিখোঁজ ব্যক্তির খোঁজ শুরু হয়। পাওয়া যায় না। এলাকায় ততক্ষণে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ওদিকে কান্নায় ভেঙে পড়েন যুবকের পরিবারের লোকজনও।
পুকুরে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালানো হলেও এখনও পাওয়া যায়নি ওই ব্যক্তিকে। প্রিয় পোষ্য কাকাতুয়াকে বাঁচাতে গিয়ে এমন পরিণতি হবে, তা ভেবেই শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম!