• সরকারি লাইব্রেরি যেন হানাবাড়ি! হরিপুরে লক্ষ লক্ষ টাকার বই পড়ে নষ্ট
    বর্তমান | ১০ জানুয়ারি ২০২৫
  • দীপন ঘোষাল, রানাঘাট: একে একে ১৫বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু গ্রামের একমাত্র লাইব্রেরির বন্ধ তালা আর খোলেনি। শান্তিপুরের হরিপুর পঞ্চায়েতে একমাত্র সরকারি লাইব্রেরি এখন হানাবাড়ির চেহারা নিয়েছে। ভেতরে লক্ষ লক্ষ টাকার বই পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। লাইব্রেরি ভবনের বাইরের অবস্থাও শোচনীয়। এই পরিস্থিতিতে এলাকার পুস্তকপ্রেমীরা বেজায় ক্ষুব্ধ। বন্ধ লাইব্রেরি খুলতে কবে উদ্যোগ নেওয়া হবে-তাঁরা সেই প্রশ্ন তুলেছেন। ওই লাইব্রেরির নাম সরস্বতী এসসি পাঠাগার। বাইরে থেকে দেখলেই বোঝা যায়, বহুকাল ধরে এই লাইব্রেরি বন্ধ। আবর্জনা ও ঝোপে লাইব্রেরিতে ঢোকার রাস্তা ঢাকা পড়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে স্যাঁতসেতে দেওয়াল একটু একটু করে নষ্ট হচ্ছে।


    আর লাইব্রেরির অন্দরমহল? সেখানে লক্ষ লক্ষ টাকার বই আজ মূল্যহীন। তার বদলে লাইব্রেরির ভেতরে বিষধর সাপ, পোকামাকড় বাসা বেধেছে। মরচে ধরে লাইব্রেরির বাইরে লাগানো বোর্ড নষ্ট হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, ওই বন্ধ লাইব্রেরি খোলার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। বিজেপি বন্ধ লাইব্রেরির জন্য তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছে। তৃণমূল অবশ্য সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।


    বিজেপির তরফে হরিপুর পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা সদানন্দ হালদার বলেন, লাইব্রেরিটি খোলা থাকলে বহু দুঃস্থ পড়ুয়া সেখানে পড়াশোনা করতে পারত। বহু মানুষের উপকার হতো। অথচ প্রশাসনের এবিষয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। তৃণমূল সরকার রাজ্যের সংস্কৃতি এবং শিক্ষা-দু’টোকেই লাটে তুলে দিচ্ছে। 


    বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে হরিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান বীরেন মাহাত বলেন, আমি প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর ওই লাইব্রেরির পরিচালন সমিতির সদস্যদের সেটি চালুর বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। পঞ্চায়েতের তরফে ওই লাইব্রেরিটি আবার খোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। শিক্ষার বিস্তারে তৃণমূল সরকার সবসময় সচেষ্ট। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী নারীশিক্ষার জন্য কন্যাশ্রী চালু করেছেন। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মতো জনমুখী প্রকল্পে এখন বহু পড়ুয়া লেখাপড়া করছে। আমি জানি, ওই লাইব্রেরি খোলা হলে এলাকার বহু ছাত্রছাত্রীর সুবিধা হবে। আমরা লাইব্রেরিটি তাড়াতাড়ি খোলার চেষ্টা করছি।
  • Link to this news (বর্তমান)