নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: ২০০৭ সালে জলপাইগুড়ি রাজবাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ওই হেরিটেজ ঘোষণার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে পরবর্তীতে আদালতে মামলা দায়ের করে রাজবাড়ির এক পক্ষ। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়িতে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি ছিল। হলফনামার ভিত্তিতে এদিন হেরিটেজ কমিশনকে প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
জলপাইগুড়ি রাজবাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণার দাবিতে একসময় সরব হয় ‘জলপাইগুড়ি ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষা মঞ্চ’। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের মে মাসে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয় জলপাইগুড়ি রাজবাড়িকে। কিন্তু তার পর থেকে একাধিক মামলা হয়েছে এনিয়ে। হেরিটেজ ঘোষণার পরও তা কার্যকর করতে কমিশন গড়িমসি করছে, এই দাবিতে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। কখনও আবার হেরিটেজ ঘোষণার পরও কেন তা কার্যকর হতে দেরি হচ্ছে, তা নিয়ে মামলা করেছেন রাজা প্রসন্নদেব রায়কতের বংশধর, বর্তমানে শিলিগুড়ির শালবাড়ির বাসিন্দা গৌরীশঙ্কর দেব রায়কত। দায়ের হওয়া মামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণেরও নির্দেশ দেয় আদালত। এরই মধ্যে বর্তমানে জলপাইগুড়ি রাজবাড়িতে বংশধর হিসেবে যিনি বাস করছেন, সেই প্রণত বসুর তরফে পাল্টা মামলা করা হয় আদালতে। মূল মামলার ভিত্তিতে হেরিটেজ ঘোষণার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় তাঁর দায়ের করা ওই মামলায়।
প্রণত বসুর পক্ষের আইনজীবী অনিরুদ্ধ বিশ্বাস বলেন, আমাদের বক্তব্য, সঠিক প্রক্রিয়া মেনে জলপাইগুড়ি রাজবাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়নি। তাছাড়া এই ঘোষণার আগে আমার মক্কেলের কোনও বক্তব্য শোনা হয়নি কিংবা তাঁর এ ব্যাপারে কোনও আপত্তি আছে কি না, সেটাও জানতে চাওয়া হয়নি। সেকারণে ওই হেরিটেজ ঘোষণার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন আমার মক্কেল। এদিন শুনানি ছিল। আদালত সবপক্ষকেই হলফনামা জমা দিতে বলেছিল। হেরিটেজ কমিশন যে এফিডেভিট জমা দিয়েছে, তার পক্ষে প্রয়োজনীয় নথি জমা করতে বলেছে আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানির ধার্য হয়েছে ১০ ফেব্রুয়ারি।
অন্যদিকে, রাজবাড়ির অন্য বংশধর গৌরীশঙ্কর দেব রায়কতের পক্ষের আইনজীবী নরেন দাস বলেন, আমাদের বক্তব্য, জলপাইগুড়ি রাজবাড়িকে অনেক আগেই হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আদালতও আগেই হেরিটেজ কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশ মেনে কমিশন দ্রুত হেরিটেজ প্রক্রিয়া কার্যকর করুক। ( রাজবাড়ির সিংহদুয়ার। - নিজস্ব চিত্র।)