সংবাদদাতা, চাঁচল: ত্রিকোণ প্রেমের জেরেই দ্বিতীয় স্বামীর হাতে নৃশংসভাবে খুন হতে হয় বছর পঁয়তাল্লিশের মহিলাকে। গত ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সাতসকালে খড়ের আগুনে পুড়তে থাকা এক মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার হয় চাঁচল থানার মালতীপুরের নির্জন আমবাগানে। সেই ঘটনায় ধৃত আবু তাহেরকে নিয়ে বুধবার রাতে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেছে পুলিস।
পুলিসের দাবি, ধৃত তাহের জেরায় স্বীকার করেছে অন্য যুবকের সঙ্গে স্ত্রী অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় সে খুন করেছে। বৃহস্পতিবার ফের চাঁচল মহকুমা আদালতে পেশ করা হয় ধৃতকে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, তাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত মহিলার বাপের বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে দুই কিমি দূরে। উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। দুই সাবালক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। প্রায় একবছর আগে তাহেরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন মহিলা। তাঁরা ভিনরাজ্যে গিয়ে কাজও করেন। সেখানেই বিয়ে করে ফেলেন বলে পুলিসি জেরায় জানায় তাহের। তবে ওই মহিলা কয়েকমাস আগে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে পুলিসকে জানায় তাহের। সেই ক্রোধেই সে খুন করেছিল। কীভাবে খুন করা হয়েছিল, তা জানতে পুলিস ধৃতকে নিয়ে বুধবার রাতে মালতীপুরে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে। পুলিস জানায়, গভীর রাতে সামসি স্টেশন থেকে হেঁটে পুরনো ৮১ নং জাতীয় সড়ক ধরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দু’জন। আবু তাহের মহিলার পিছন পিছন হেঁটেছিল। একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজে সেই দৃশ্য দেখা যায়। সেই নির্জন আমবাগানে তারা আগেও একাধিকবার এসেছিল। সেখানে খড়ের গাদার উপর বসে দীর্ঘক্ষণ কথা কাটাকাটি চলে। মহিলা সেখান থেকে উঠে যেতেই তাঁকে পিছন থেকে আক্রমণ করে তাহের। প্রথমে চাকু দিয়ে গলার নলি কেটে পেটের মধ্যে দু’বার কোপ মারে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মহিলা। তখন মৃতদেহের উপর খড়ের আঁটি চাপিয়ে দেশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় অভিযুক্ত। সেই রক্তমাখা চাকু ও দেশলাই পুলিস ঘটনাস্থল থেকেই উদ্ধার করেছিল। পরে হেঁটে এবং ছোট গাড়িতে চেপে চাঁচল সদর হয়ে আশাপুরে পৌঁছয় তাহের। সেখান থেকে গাড়ি ধরে চলে যায় কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটায় বোনের বাড়িতে। সেখানে তাকে আশ্রয় দেওয়া হয়নি। এরপর ট্রেনে চেপে বাইরে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও পুলিসের জালে ধরা পড়ে সে। চাঁচল থানার এক আধিকারিক বলেন, ধৃত যুবক একাই খুন করেছে বলে জেরায় স্বীকার করেছে। - নিজস্ব চিত্র