ফের বাঘের গর্জন, এবার বৈকুণ্ঠপুরের তিন কিলোমিটার দূরে নগেনাবাদে রয়্যাল বেঙ্গল
বর্তমান | ১০ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, বারুইপুর: মৈপীঠে আবার বাঘের গর্জন। আবার নতুন করে আতঙ্ক। আবার রয়্যাল বেঙ্গলের পায়ের ছাপ। সোম-মঙ্গল বিস্তর চেষ্টার পর বুধবার মাগরি নদীর ধারে অবস্থিত উত্তর বৈকুণ্ঠপুর থেকে একটিকে তাড়ানো সম্ভব হয়েছিল। এবার সেখান থেকে জঙ্গলপথে তিন কিলোমিটার দূরত্বে মাগরি নদীর ধারের নগেনাবাদ মোল্লাপাড়ায় মিলল বাঘের পায়ের ছাপ। কানে এল বুক কাঁপানো গর্জন।
বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়ায় কার্যত ঘুম উড়ে গিয়েছে মৈপীঠের নগেনাবাদ মোল্লাপাড়ার বাসিন্দাদের। এরপর খবর বনদপ্তরকে। ঘটনাস্থলে আসেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা বনদপ্তরের কর্মী-আধিকারিকরা। তড়িঘড়ি স্টিলের জাল জঙ্গলের চারপাশে লাগানো হয়। বাঘকে লোকালয়ে ঢোকা আটকাতে রাত পাহারার ব্যবস্থাও হয়। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ‘আজমলমারি এক নম্বর জঙ্গল থেকে বেরিয়েছে বাঘটি। পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে। তার অবস্থান বুঝে প্রায় ৫০০ মিটার জঙ্গল জাল দিয়ে ঘেরা হয়েছে। শুধু নদীর দিকে জালের মুখ খোলা। যাতে বাঘ নদীপথে বেরিয়ে যেতে পারে। বাজি-পটকা মজুত। উত্তর বৈকুণ্ঠপুরের মত অবস্থা বুঝে বোমা চার্জ হবে।’
তবে এবার জঙ্গল থেকে লোকালয় প্রায় ৭০০ মিটার দূরে। তাই বাসিন্দাদের আতঙ্কের কারণ নেই বলেছে বনদপ্তর। কিন্তু গ্রামবাসীদের উল্টো মত। সুবল ঘড়াই নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘ভোরে বাঘের গর্জনে কেঁপে ওঠে এলাকা। ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারিনি। এর আগেও এই এলাকায় এক মাস আগে বাঘ এসেছিল।’ ভোলা ঘোষ নামে অন্য একজন বলেন, ‘সকালে নদীর পাড়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে। তারপর থেকেই ঘরবন্দি হয়ে গিয়েছেন বাসিন্দারা। রাত পাহারা দিয়েই কাটাতে হবে।’ প্রসঙ্গত সোম থেকে বুধ তিনদিন বাঘের আতঙ্ক গ্রাস করে ছিল শ্রীকান্তপল্লি, দক্ষিণ বৈকুণ্ঠপুর ও উত্তর বৈকুণ্ঠপুর। বাঘটি বারবার নিজের অবস্থান বদল করছিল। বুধবার ভোরে উত্তর বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম সংলগ্ন জঙ্গল থেকে বাঘ নিজের ডেরা আজমলমারি ১১ নম্বর জঙ্গলে ফিরে যায়। তার একদিন পরই ফের বাঘের আগমন। বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ‘উত্তর বৈকুণ্ঠপুরের বাঘ আদৌ নিজের জঙ্গলে গিয়েছিল তো? নাকি জঙ্গলে গিয়ে আবার বেরিয়ে নদী পার হয়ে নগেনআবাদে চলে এসেছে।’ তবে বনদপ্তর বলছে, ‘এখানে অন্য একটি বাঘ এসেছে। উত্তর বৈকুণ্ঠপুরের বাঘ নিজের ডেরায় ফিরে গিয়েছে। তা পায়ের ছাপ পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গিয়েছিল।’ অরণ্যের বাঘ কেন নিজের জঙ্গল ছেড়ে চলে আসছে লোকালয় সংলগ্ন বনে? দানা বাধছে প্রশ্ন। স্পষ্ট উত্তর আপাতত নেই। আছে শুধু তাকে ঘিরে তৈরি হওয়া আতঙ্ক।