• পুলিসের ডিসি অফিস থেকে ৩২ পা দূরে আন্ডারগ্রাউন্ড ‘ক্যাসিনো’, বেলেঘাটা সিআইটি রোডের ধারে মধ্যরাত পর্যন্ত কোটি টাকার খেলা
    বর্তমান | ১০ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বেলেঘাটার সিআইটি রোড। কলকাতা পুলিসের ডেপুটি কমিশনারের (ইস্ট সাবার্বান ডিভিশন) অফিস সেখানেই। অফিসের মূল গেট থেকে ওই ফুটপাত ধরেই গুণে গুণে ঠিক ৩২ পা দূরে এক অভিজাত আবাসন। আবাসনের পাশে সরু গলি দিয়ে ঢুকলেই ডানদিকে কালো সাদা একটি দরজা। আপাতভাবে বোঝা মুশকিল ভিতরে আদৌ কী রয়েছে! সিঁড়ি দিয়ে ৮টি ধাপ নীচে নামলেই হতবাক হতে হবে!  একেবারে ঝাঁ চকচকে ‘ক্যাসিনো’ স্টাইলের ঘরে উড়ত বান্ডিল বান্ডিল টাকা। খাস কলকাতা চোখ কপালে তোলার মতো কাণ্ড। পুলিসি নজর এড়িয়ে কীভাবে রমরমিয়ে চলছে জুয়া ব্যবসা? প্রশ্ন তুলছেন খোদ বেলেঘাটাবাসী। 


    পি-২২৭, সি আই টি রোড। আবাসনের নাম রাধারাণি অ্যাপার্টমেন্ট। তার আন্ডারগ্রাউন্ড ফ্লোরের আয়তন প্রায় ১৬০০ স্কোয়ার ফুট। তিনটি বিশালাকার কাচের ঘর। প্রত্যেকটিতে সাজানো রয়েছে একটি করে বিশাল ক্যাসিনো টেবিল। তাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাসের টেক্কা, বিবি, গোলাম। সেই টেবিল ঘিরে আটটি করে আরামদায়ক চেয়ার। ভিতরে মদ্যপান ও সিগারেট পানের আলাদা ঘর রয়েছে। সঙ্গে থাকত এলাহি খানাপিনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেখানেই রাত একটা-দেড়টা পর্যন্ত গানের শব্দে কানপাতা দায় হতো।


    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবাসনের এক বাসিন্দার কথায়, এই বেসমেন্টে একটি কসমেটিক্স কোম্পানির গোডাউন ছিল। বছরখানেক আগে জায়গাটি কিনে নেন এক অবাঙালি ব্যবসায়ী। তারপর সেটি ঝাঁ চকচকে করে বানানো হয়। পুজোর পর থেকেই সেখানে ‘ব্যস্ততা’ শুরু হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে স্থানীয়রা কিছু জানতেন না। ধীরে ধীরে জুয়া খেলার কথা রটে যায় এলাকায়। আরও এক বাসিন্দা জানান, সন্ধ্যা ছ’টা থেকেই গেটে বসে যান নিরাপত্তারক্ষী। সিআইটি রোডের উপর বিলাসবহুল গাড়ির ভিড় লেগে যেত। গভীর রাত পর্যন্ত চলত মোচ্ছব। রাতে মহিলা আসা-যাওয়া করেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। তাঁদের আরও অভিযোগ, এই ক্যাসিনোর সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুশান্ত সাহা ওরফে হাবু। যদিও সুশান্তবাবু বলেন, সেখানে কী হতো আমার জানা নেই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে কেউ আমাকে বদনাম করতে চাইছে।
  • Link to this news (বর্তমান)