এই সময়: আলিপুর চিড়িয়াখানার জমির একাংশে শপিং মল করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি তুলেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তাদের অভিযোগ, আর্থিক দুরাবস্থার কারণেই রাজ্য সরকার চিড়িয়াখানার জমি বেচে দিচ্ছে। এর প্রতিবাদেই বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে এ দিন দুপুরে রবীন্দ্রসদন থেকে আলিপুর চিড়িয়াখানা পর্যন্ত বিজেপির মিছিল হয়।
সেখান থেকে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। তাই এখন সরকারি সম্পত্তি বেসরকারি সংস্থার হাতে তারা বেচে দিতে চাইছে।’ বিজেপির অভিযোগ, মূল আলিপুর চিড়িয়াখানার উল্টো দিকে চিড়িয়াখানার একটি অ্যাকোরিয়াম, একটি অডিটোরিয়াম, একটি পশু–হাসপাতাল এবং স্টাফ কোয়ার্টার রয়েছে। এগুলির হতশ্রী দশা। ওই জমি বাণিজ্যিক কাজে রাজ্য সরকার ব্যবহার করতে চাইছে বলে বিজেপির দাবি। এর বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন শুভেন্দু।
বিজেপির এই মিছিল নিয়ে অবশ্য আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছিল। পুলিশের কাছ থেকে মিছিল করার অনুমতি না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু অধিকারীরা। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ বিজেপি–কে রবীন্দ্রসদন থেকে আলিপুর চিড়িয়াখানা পর্যন্ত মিছিল করার অনুমতি দেয় আদালত। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই রায় চ্যালেঞ্জ হলো ডিভিশন বেঞ্চে। যদিও বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের আবেদন খারিজ করে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়–ই বহাল রাখে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়ের পরই মিছিল বের করে বিজেপি।
বুধবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর সিঙ্গল বেঞ্চ বেলা ১২টা থেকে তিনটের মধ্যে সময় বেঁধে দিয়েই এই মিছিলের অনুমতি দিয়েছিল। দিনের ব্যস্ত সময়ে যানজটের আশঙ্কার যুক্তি দেখিয়েই রাজ্য সেই রায় চ্যালেঞ্জ করেছিল ডিভিশন বেঞ্চে। বিজেপির এই মিছিলকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের রাজ্য সহ–সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘চিড়িয়াখানা চালায় কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সংস্থা। সুতরাং সেখানকার জমিতে রাজ্য সরকার কিছু করলে বুঝতে হবে, সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি ছাড়া হচ্ছে না। অথবা ওটা কেন্দ্রীয় সরকারের জমি–ই নয়। এই তথ্য গোপন রেখে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্যই বিজেপির এই মিছিল ছিল।’