এই সময়: প্রথম চোখ পড়লে মোবাইল ফোন বলেই মনে হবে যন্ত্রটাকে। কিন্তু ওর কাজ কথা বলা বা ছবি তোলা নয়। আগামী দিনে হয়তো পেপার স্প্রের মতোই এমন যন্ত্র ঘুরবে মহিলাদের ব্যাগে। অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ তাঁদের দিকে এগোলে এই যন্ত্রের একটা বোতাম টিপলে একই সঙ্গে অ্যালার্ম বেজে উঠবে এবং পি–রেকর্ডেড কোনও ফোন নম্বরে এসএমএস যাবে, ‘আমি বিপদে পড়েছি। সাহায্য চাই।’
ওই যন্ত্রেরই অন্য বোতামের কাজ মহিলাদের আত্মরক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করা। এই বোতাম টিপলেই উচ্চশক্তির ইলেকট্রিক স্পার্ক বেরিয়ে অসৎ ব্যক্তিকে কিছুক্ষণের জন্য অকেজো করে দেবে। এমনই যন্ত্রের প্রোটোটাইপ দেখা গেল বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজ়িয়মে (বিআইটিএম)।
ট্রাকে যতটা পণ্য তোলা উচিত, তার চেয়েও বেশি ওজনের পণ্য তোলার সমস্যায় অর্থাৎ ‘ওভারলোডিং’ সমস্যায় জেরবার গোটা দেশ। কিন্তু অতি সহজেই ইলেকট্রনিক সেন্সরের মাধ্যমে যে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব, সেটা দেখিয়ে দিল কয়েক জন স্কুলপড়ুয়া। তাদের তৈরি সেন্সর একটা খেলনা ট্রাকে বসানো ছিল। ওই ট্রাকে নির্দিষ্ট ওজনের চেয়ে বেশি ওজন বসাতেই নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরে ওভারলোডিংয়ের মেসেজ গেল গাড়ির নম্বর সমেত। পড়ুয়ারা জানাল, এই ভাবে যে কোনও রাজ্যের মোটর ভেহিকল ডিপার্টমেন্ট নজর রাখতে পারবে পণ্যবাহী ট্রাকের উপরে। এমন সেন্সরেরও দেখা পাওয়া গেল বিজ্ঞান মেলায়।
বিআইটিএমে তিন দিনের বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধন হয়েছে বুধবার। মেলা চলবে আজ, শুক্রবার পর্যন্ত। এই মেলায় যোগ দিয়েছিল বাংলা, বিহার ও ওডিশার বেশ কয়েকটি স্কুল। বিআইটিএম–এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মোট প্রায় ৩৫০ জন পড়ুয়া এই মেলায় অংশ নিয়েছিল। ওডিশা থেকে ২৮টি, বিহার থেকে ৩৯টি এবং বাংলা থেকে ১৮ — মোট ৮৫টি বিজ্ঞানের প্রদর্শন এনেছিল স্কুলপড়ুয়ারা। এ ছাড়াও বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও আইটিআই–এর ছাত্রছাত্রীরা এনেছিলেন ২০টি প্রদর্শন। এর মধ্যে বেশ কিছু প্রদর্শন ছিল গত কয়েক বছরে তৈরি হওয়া নিত্যদিনের সমস্যা সমাধান সংক্রান্ত।
বিভিন্ন জায়গায় যে ভাবে হুকিং এবং অন্য অবৈধ পদ্ধতিতে বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে, তাতে রীতিমতো চিন্তিত প্রশাসন। কী ভাবে এমন বিদ্যুৎ চুরি আটকানো যায় — তার দিশা দিয়েছেন এমসিকেভি ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়ারা। ‘স্মার্ট পার্কিং এরিয়া’–র মাধ্যমে কী ভাবে পার্কিং লটে গাড়ি রাখা অনেক বেশি বিজ্ঞানসম্মত করা যায়, সেই রাস্তাও দেখিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়ারা। উলুবেড়িয়া গভর্নমেন্ট পলিটেকনিকের পড়ুয়া এনেছিলেন বাতাসের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ তৈরির টারবাইনের ক্ষুদ্র সংস্করণ।