এই সময়: পাসপোর্ট জালিয়াতির ঘটনায় পুলিশের অনেকেই যে জড়িত রয়েছেন একে একে তা সামনে আসছে। কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন এসআই আব্দুল হাই গ্রেপ্তার হওয়ার পর জালে পড়েছেন রাজ্যে পুলিশের হোমগার্ড মহম্মদ ইমরান। এ–বার পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুলিশের দু’টি ডিভিশনের পাঁচ থানার কিছু অফিসারও গোয়েন্দাদের নজরে এলেন। পাসপোর্ট জালিয়াতির সঙ্গে এঁরা জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশের দাবি, তাদের হেফাজতে থাকা বেহালার মনোজ গুপ্তা এবং আব্দুল হাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইতিমধ্যেই জালিয়াতির ঘটনায় অনেক তথ্যপ্রমাণ উঠে এসেছে। সেই সূত্রে যে কয়েকজনের নামের তালিকা তৈরি করেছেন তদন্তকারীরা, সেখানেই রয়েছে দু’টি ডিভিশনে কর্মরত কিছু পুলিশ অফিসারদের নাম।
পাসপোর্ট অফিসের কয়েকজন কর্তাদের বিষয়েও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। এই কর্তাদের সঙ্গে যোগসাজস করে পাসপোর্ট জালিয়াতির কারবার চলছিল বলে দাবি তদন্তকারীদের। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ৫১টি পাসপোর্টের ভেরিফিকেশন করেছিলেন কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন এসআই আব্দুল। আরও ১০০টি পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনেও গোলমাল পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি আব্দুল ছাড়াও অন্যান্য যে অফিসারেরা ভেরিফিকেশন করেছিলেন, তাঁরাই এখন তদন্তকারীদের নজরে।
পাসপোর্ট জালিয়াতির ঘটনায় চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট মহম্মদ ইমরান নামে সেখানকার ট্র্যাফিক পুলিশের এক হোমগার্ডকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া মোহন সাউ এবং বিশ্বজিৎ ঘোষ নামে দুই ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতরা ভুয়ো নথির সাহায্য পাসপোর্ট জালিয়াতিতে সাহায্য করতেন বলে অভিযোগ। একই আধার নম্বর দিয়ে একাধিক পাসপোর্ট তৈরিতেও তাঁরা যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ। চন্দননগর পুলিশ কমিশনার অমিত জাগলভি বলেন, ‘গত নভেম্বরে আধার কার্ড নিয়ে একটি অভিযোগ আসে পুলিশের কাছে। তারপরেই ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে।’
বারাসত থেকে গ্রেপ্তার হওয়া সমীর দাসকে জেরা করে বৃহস্পতিবার েসখানকার রামকৃষ্ণপল্লীর খেজুরতলা থেকে ধরা হয়েছে কৌশিক মণ্ডল এবং চন্দন চক্রবর্তীেকে। মোবাইলের সূত্রে বেশ কিছু জাল নথিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। কৌশিক সাইবার ক্যাফের আড়ালে ভুয়ো নথির জালিয়াতির কারবার শুরু করেছিল বলে অভিযোগ। মনোজ–আব্দুলের সঙ্গে বারাসত এবং চন্দননগরের পুলিশের জালে ধরা পড়া অভিযুক্তদের মধ্যে কোনও যোগসূত্র রয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশ।