গোটা মুখ গামছা দিয়ে মোড়া। মাথা নিচু করে উঠলেন পুলিশের গাড়িতে। শুক্রবার সকালে তাঁকে আদালতে হাজির করানো হলেও সংবাদমাধ্যমের সামনে ‘স্পিকটি নট’ নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি। মালদার কাউন্সিলার খুনে তিনিই প্রধান অভিযুক্ত বলে দাবি পুলিশের। যদিও, নিহত কাউন্সিলারের স্ত্রী চৈতালি সরকার দাবি করে আসছেন, এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত থাকতে পারে। শুক্রবার আদালত নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও স্বপন শর্মাকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
দুলাল হত্যার ঘটনায় গত ৮ জানুয়ারি নরেন্দ্রনাথকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। গ্রেপ্তারের দিনেই নরেন্দ্র বলেছিলেন, ‘বড় মাথা আছে। দুলাল বড় মাথার শিকার। আমিও বড় মাথার শিকার।’ কিন্তু, সেই বড় মাথা কে? সে ব্যাপারে মুখ খোলেননি নরেন্দ্র। এ দিনও তাঁকে ‘বড় মাথা’ নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও নিশ্চুপ ছিলেন। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার আরেক অভিযুক্ত স্বপন শর্মা বলেন, ‘মাথা কে, আমি কী ভাবে বলব? ওটা পুলিশ বলবে।’
পুলিশ সূত্রে খবর, দুলালকে গুলি করে হত্যা করার পরেই নরেন্দ্র তিওয়ারির ফোনে একটি কল যায়। এক সুপারি কিলার তাঁকে ফোন করেছিল বলেই জানতে পারে পুলিশ। দুইয়ে দুইয়ে চার করতে অসুবিধা হয়নি তদন্তকারীদের। এই খুনের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার সুপারি নেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি করা হয় পুলিশের তরফে। এর পরেই গ্রেপ্তার করা হয় নরেন্দ্রনাথকে।
অন্যদিকে দুলালের স্ত্রী চৈতালি এ দিন বলেন, ‘আজকে এই ঘটনায় বিরোধীরাও চোখের জল ফেলেছে। দুলালবাবুর কাছে যখনই কেউ আসতেন, তখনই উনি তাঁর ক্ষমতা অনুযায়ী সাহায্য করতেন। কোনওদিন অসাধু কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতেন না। এক সময় রেলের ঠিকাদারি করতেন কিন্তু এখন করেন না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই এই খুন করা হয়েছে। আমার দীর্ঘ বিশ্বাস, দলনেত্রী বিষয়টি দেখছেন, তদন্তে যা যা করার তাঁরাই করবেন।
শুক্রবার তদন্তে আরও কিছুটা অগ্রগতি করেছে মালদা পুলিশ। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার টিঙ্কু ঘোষ, শামি আক্তার, অভিজিৎ ঘোষ-সহ বাকিদের জেরা করে খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে একটি নাইন এমএম পিস্তল, দুটি ওয়ান শটার , সাতটি কার্তুজ।