•   বালি পাচার রুখতে বীরভূমের একাধিক ঘাটে প্রশাসনের হানা, বাজেয়াপ্ত ১২টি ডাম্পার
    বর্তমান | ১০ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: অবৈধ বালি পাচার রুখতে ফের সক্রিয় হল বীরভূম জেলা প্রশাসন। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাত থেকে আজ, শুক্রবার ভোর পর্যন্ত নানুরের বিভিন্ন জায়গায় হানা দেয় জেলা প্রশাসন ও পুলিস। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়ের নেতৃত্বে বিভিন্ন অবৈধ বালি ঘাটে অভিযান চালানো হয়। জেলাশাসকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বিশ্বজিৎ মোদক এবং বোলপুরের এসডিপিও রিকি আগরওয়ালও। আচমকা এই হানায় বিভিন্ন বালিঘাট থেকে বালি তোলার জন্য ব্যবহৃত দুটি আর্থ মুভার এবং ১২টি বালি ভর্তি ডাম্পার, আটটি মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করে প্রশাসন। জেলায় অবৈধ বালি পাচার নিয়ে কোনওভাবেই আপোস করা যাবে না, এদিনের অভিযানে তা স্পষ্টতই‌ বুঝিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আগামীদিনেও একইভাবে এই অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক। প্রশাসনের এই কঠোর পদক্ষেপে খুশি নানুরের বাসিন্দারা।


    বীরভূম জেলার একটা বড় অংশ জুড়ে বইছে অজয় নদ। জেলায় ইলামবাজার, বোলপুর, নানুর হয়ে এই নদ পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় গিয়ে গঙ্গার সঙ্গে মিশেছে। বীরভূমের যে এলাকাগুলিতে নদীটি বয়ে গিয়েছে সেখানকার বালি উৎকৃষ্ট হওয়ার কারণে নির্মাণকার্যে তা ব্যবহৃত হয়। এই বালি থেকে কোটি কোটি টাকা উপার্জন হওয়ার কারণে বৈধ ঘাটের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো অবৈধ বালিঘাটও গজিয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। প্রশাসন মাঝে মাঝেই অভিযান ও নজরদারি চালায়। কিন্তু জেলায় বিভিন্ন নির্বাচন, মেলা এবং উৎসবে পুলিস-প্রশাসন ব্যস্ত হয়ে পড়লে সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগায় বালি মাফিয়ারা। সম্প্রতি বালি পাচারের অভিযোগ সামনে আসতেই বেশ কয়েকদিন ধরেই অভিযান চালাচ্ছে পুলিস ও প্রশাসন। এরপর নানুর থানায় অবৈধ বালির রমরমা কারবার জানতে পেরে গতকাল রাতে জেলাশাসকের নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি দল রাউতারা, হোসেনপুর, পালিতপুর এলাকায় পৌঁছায়। একের পর এক ঘাটে আচমকা হানা দিতেই যানবাহন ও বালি তোলার উপকরণ ফেলে বালি মাফিয়ার দল চম্পট দেয়। এরপরই জেলাশাসকের নির্দেশে নানুর থানার পুলিস দুটি আর্থ মুভার-সহ ডাম্পার ও অন্যান্য যানবাহন বাজেয়াপ্ত করে। সংশ্লিষ্ট ঘাটগুলির বিরুদ্ধে আইন মেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিধানবাবু। তিনি বলেন নানুরের পাশাপাশি একই সময়ে ইলামবাজার, সিউড়ি, রামপুরহাট ও ময়ূরেশ্বরেও অভিযান চালানো হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই অভিযান চলছে এবং আগামী দিনেও চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি। বেআইনি ভাবে বালি উত্তোলন ও পাচারের ঘটনা সামনে এলেই প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে। অবৈধ কারবার কঠিনভাবে দমন করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)