কাটোয়ায় ব্রহ্মাণী নদীর সেতুর সংযোগকারী রাস্তা বেহাল, আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা
বর্তমান | ১১ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, কাটোয়া: কাটোয়ার মালঞ্চা ও দেয়াসীন গ্রামের মাঝে ব্রহ্মাণী নদীর সেতুর দু› দিকের সংযোগকারী রাস্তা ধসে যাচ্ছে। গার্ডওয়াল হেলে যাচ্ছে৷ মাটি ধরে ঢালাই রাস্তাও ধস নামছে৷ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজের অভিযোগ তুলছেন স্থানীয়রা৷ সেতু নিয়ে নানা টালবাহানায় স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ।
কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা পূর্বতন সাংসদকে বার বার এমন অবস্থার আশঙ্কার কথা বলেছিলাম৷ কিন্তু তিনি আমাদের কথা শোনেননি৷ সেতুর দু’ দিকের রাস্তা বসে যাচ্ছে৷ তাতে সেতুর অবস্থা আরও খারাপ হবে৷ আমরা জেলাশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি৷ অবিলম্বে জেলা প্রশাসন হস্তক্ষেপ না করলে বিপদ বাড়বে৷
কাটোয়া ২ ব্লকের মালঞ্চা ও দেয়াসীন গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়েছে ব্রহ্মাণী নদী। আর এই ব্রহ্মাণী নদীর উপরেই সেতুটি রয়েছে৷ এই সেতুই মালঞ্চা, দেয়াসীন, খাসপুর সহ আশপাশের প্রায় ৬ থেকে ৭টি গ্রামের প্রধান ভরসা। সেতু চালু হওয়ার বছর ঘুরতেই দু’ দিকের রাস্তা বেহাল। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, আগে মাটি ফেলে রাস্তা তৈরি করা হয়েছিল৷ তার উপরে ঢালাই রাস্তা তৈরি করা হয়েছে৷ তাও আবার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল৷
গ্রামের বাসিন্দা পূর্ণিমা ধারা, সুদেব ধারা বলেন, সেতুতে গাড়ি উঠলেই কাঁপছে৷ রাস্তা ধসে গিয়েছে৷ বর্ষায় নদী পাড়ের মাটিতে ধস নামলেই আবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আমরা তখন বলেছিলাম ভালো করে তৈরি করতে৷ কিন্তু তার আমাদের কথা শোনেনি৷ কাটোয়া-২ বিডিও আসিফ আনসারী বলেন, আমরা শীঘ্রই খোঁজ নেব।
প্রশ্ন উঠছে যে সংস্থা সেতুর সংযোগকারী রাস্তা তৈরি করেছিল, তারা কেন দ্বায়িত্ব নেবে না৷ প্রসঙ্গত, সেতু তৈরি হতে দীর্ঘ টালবাহানা চলেছিল৷ ২০১৮ সালে শিলান্যাস হলেও কাজ শুরু হয় বহু পরে৷ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে সংসদ সদস্য তহবিল থেকে এই মালঞ্চা সেতু তৈরির জন্য ২ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। তারপর সেতু তৈরির জন্য একটি সংস্থাকে টেন্ডার ডেকে সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। অভিযোগ, কাজ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যেই সেতু তৈরি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আবার বাসিন্দাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায়। অভিযোগ, তৎকালীন বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের সাংসদ মালঞ্চা সেতু তৈরিতে কোনও গুরুত্ব দেননি৷ কারণ সেতুর দু’ দিকের সংযোগকারী রাস্তা তিনি প্রথমে করেননি৷ এরপর আবার ৮০ লক্ষ টাকা খরচ করে দু’ দিকের সংযোগকারী রাস্তা হয়৷ কিন্তু বছর ঘুরতেই তার অবস্থা বেহাল। বাসিন্দাদের আশঙ্কা সেতু কোনওদিন না ভেঙে পড়ে যায়।