• কল সেন্টার খুলে আর্থিক প্রতারণা, বারাসত পুলিসের জালে তিন যুবতী সহ চক্রের ৬ জন
    বর্তমান | ১১ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: প্রায় দু’বছর ধরে মধ্যমগ্রামে যশোর রোডের ধারে রীতিমতো অফিস খুলেই চলছিল আর্থিক প্রতারণা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই ডেরায় হানা দিয়ে তিন মহিলা সহ মোট ছ’জনকে গ্রেপ্তার করল বারাসত সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস। ধৃতদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, স্মার্ট ও কিপ্যাড মোবাইল সহ বেশ কিছু ভুয়ো নথি উদ্ধার করেছে পুলিস। ধৃতরা হল শুভ সিং (৩৪), সজীব মজুমদার (৩৬), সুমন দে (৩৫), পূজা বিশ্বাস (২৪), ঝিলিক দাস (২৮) ও শম্পা দে (৩২)। এদের মধ্যে সুমনই হল চক্রের মাথা। শুক্রবার ধৃতদের বারাসত আদালতে তোলা হলে সাতদিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।


    মধ্যমগ্রামের শিশিরকুঞ্জ এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে দু’বছর ধরে চলছিল কল সেন্টার। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়ে তরুণীদের নিয়োগ করা হতো। এখানে মোট ৩৪ জন কর্মী কাজ করেন, তারমধ্যে ২৩ জনই মহিলা। সেন্টারের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। খবর যায় থানায়। বারাসত সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস এনিয়ে খোঁজখবর নেয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পারে, ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে টাকা হাতাচ্ছে এই সংস্থা। মানুষের সঙ্গে কথা বলে প্রতারণার ছক চূড়ান্ত করা হতো। গ্রাহকদের কোনও জিজ্ঞাসা থাকলে, কীভাবে তা মোকাবিলা করতে হবে, তাও সেন্টারের কর্মীদের শিখিয়ে পড়িয়ে দিত সুমন। মহিলারাই ফোন করতেন সাধারণ মানুষকে। এরজন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার ভুয়ো কাগজ, বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ভুয়ো প্রমাণপত্র, সিল, স্ট্যাম্প থাকত সেন্টারে। এমনকী কিছু মানুষকে ভুল বুঝিয়ে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়ে প্রতারণার ব্যবসা ফেঁদেছিল সংস্থাটি। অভিযোগ, ঋণ নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে দফায় দফায় তাঁদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হতো। প্রথমে গ্রাহকদের টাকা ভাড়া করা অ্যাকাউন্টে জমা করা হতো। এরপর সেই টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হতো। শেষে সুমন নিজের অ্যাকাউন্টে ওই টাকা সরিয়ে নিত। তারপর এটিএম কার্ড দিয়ে ওই টাকা তুলে নিত সে। এই খবর পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে বারাসতের এসডিপিওর নেতৃত্বে সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস অভিযান চালায় কল সেন্টারে। কর্মরতদের জেরা করে সংস্থার ছ’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। সেখান থেকে দু’টি ল্যাপটপ, একটি কম্পিউটার, অ্যান্ড্রয়েড ও কি-প্যাড যুক্ত ৪২টি ফোন ও বেশ কিছু ভুয়ো নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।


    এ প্রসঙ্গে বারাসতের পুলিস জেলার অতিরিক্ত সুপার স্পর্শ নীলাঙ্গি বলেন, ধৃতদের জেরা করে আরও তথ্য জানা হবে। কত টাকা তারা প্রতারণা করেছে, কতজনকে এই ফাঁদে তারা ফেলেছিল, সবই উঠে আসবে জেরায়।
  • Link to this news (বর্তমান)