এই সময়: আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ গ্রেপ্তার হওয়ার পরে তাঁর ডাক্তারি রেজিস্ট্রেশন অনির্দিষ্ট কালের জন্য বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। বৃহস্পতি ও শুক্রবার হাইকোর্টের নির্দেশে সেই সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার জন্য শুনানি চলে। আর সেই শুনানিতে চিকিৎসক অভীক দে-র উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
অভীক কাউন্সিলের পেনাল অ্যান্ড এথিক্যাল কমিটির সদস্য। কিন্তু তিনি নিজেই থ্রেট কালচারে অভিযুক্ত এবং সেই অভিযোগের অনেকটাই স্বাস্থ্য দপ্তর গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে প্রমাণিত। এমন একজন চিকিৎসক সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন থাকবে নাকি বাতিল হবে, সেই শুনানিতে হাজির থাকায় ক্ষুব্ধ চিকিৎসক মহল। এ দিন এর প্রতিবাদ জানাতে চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চ বিক্ষোভ দেখায় সল্টলেকে কাউন্সিল অফিসের সামনে।
দুর্নীতি এবং তরুণী চিকিৎসকের খুন–ধর্ষণের ঘটনায় তথ্যপ্রমাণ লোপাটে অভিযুক্ত সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন গত ১৯ সেপ্টেম্বর বাতিল করে মেডিক্যাল কাউন্সিল। পরে সন্দীপের স্ত্রী আদালতের দ্বারস্থ হন ওই রেজিস্ট্রেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে। তাঁর বক্তব্য ছিল, কাউন্সিলের পাঠানো শো–কজ় নোটিসের উত্তর না মিললে অথবা সন্তোষজনক জবাব না পাওয়া গেলে পরের ধাপে রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম। কিন্তু সিবিআই হেফাজতে থাকায় সেই শো–কজ়ের জবাব দেওয়া তাঁর স্বামীর পক্ষে সম্ভব ছিল না।
সে জন্য বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান স্ত্রী। সেই আবেদনে মান্যতা দিয়ে আদালত কাউন্সিলকে এ ব্যাপারে শুনানির নির্দেশ দেয়। সেখানে কেন অভীক উপস্থিত থাকবেন, এ দিন সেই প্রশ্নে সোচ্চার হয়েই চিকিৎসকরা বিক্ষোভ দেখান কাউন্সিল অফিসের সামনে।
যদিও শুনানির ফলাফল এখনও জানা যায়নি। কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তী এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। মুখ খোলেননি অভীকও। তবে মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি সুদীপ্ত রায় বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। অনেক পদ্ধতি পেরোনোর পরে আমরা কোনও একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারি।’
অন্য দিকে, রেজিস্ট্রেশন ফেরানোর বিষয়ে যখন কাউন্সিলের ভিতরে শুনানির বৈঠক চলছে, সে সময়ে বাইরে বিক্ষোভ দেখান চিকিৎসকরা। যৌথ মঞ্চের তরফে প্রমোদরঞ্জন রায় ও পবিত্র গোস্বামী জানান, সন্দীপ ঘোষের রেজিস্ট্রেশন পুনর্বিবেচনা করতে বৈঠকে রয়েছেন অভীক দে, তাপস চক্রবর্তীর মতো থ্রেট কালচারে অভিযুক্ত ডাক্তাররা। এর চেয়ে বড় প্রহসন আর কী হতে পারে!