স্যালাইন বিপর্যয়ে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে যখন তোলপাড় চলছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তখন সেই নিষিদ্ধ সংস্থার স্যালাইন ব্যবহারের অভিযোগ বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। যদিও এই অভিযোগ এক যোগে অস্বীকার করেছেন বাঁকুড়া সম্মিলনী কলেজের অধ্যক্ষ ও সুপার। তাঁদের বক্তব্য, ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোনও ভাবেই ওই রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন কোনও ওয়ার্ডে যেন ব্যবহার না করা হয়।
দক্ষিণবঙ্গর অন্যতম নামকরা মেডিক্যাল কলেজ বাঁকুড়া সম্মিলনী। জেলার মানুষ তো বটেই পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান, এমনকী পশ্চিম মেদিনীপুরের একাংশ থেকেও রোগী আসেন এখানে। পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকেও আসেন রোগী। সেখানেই বিতর্কিত ‘পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালস’-এর সরবরাহ করা রিঙ্গার ল্যাকটেট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
নিষেধাজ্ঞার পরও প্রশ্ন উঠছে, তা কতটা সম্মিলনী মেডিক্যালে কার্যকর হয়েছে। অভিযোগ, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মেল মেডিসিন ওয়ার্ডের স্যালাইন স্ট্যান্ডে নিষিদ্ধ সেই স্যালাইনের বোতল ঝুলতে দেখা গিয়েছে।
রোগী নিয়ে এসেছেন সঞ্জয় মাজি। তাঁর বক্তব্য, ‘আমাদের রোগীকে ওই স্যালাইনই দেওয়া হয়েছে। ডাক্তাররা তো সবই বোঝেন। তাই আমরা কিছু বলতেও পারছি না।’ তবে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডুর বক্তব্য, ‘স্বাস্থ্য ভবন থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালস’-এর সরবরাহ করা রিঙ্গার ল্যাকটেট ‘ডাউটফুল’। এটা ব্যবহার না করতে বলা হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে সেই নির্দেশও দিয়ে দিয়েছি। ওয়ার্ড থেকে তুলে নিতে বলা হয়েছে। স্টোরে স্টক থাকলেও তা আর বেরোবে না।’
একই বক্তব্য সুপার অর্পন গোস্বামীরও। তিনি জানান, কোনও ওয়ার্ডে এই স্যালাইনের ব্যবহার হচ্ছে কি না তা দেখতে নিজে বিষয়টি দেখছেন। ওয়ার্ডে, ওয়ার্ডে ঘুরে দেখেন তিনি। তাঁরা আগে থেকেই সতর্ক। প্রায় ৪ হাজারের মতো স্যালাইন হাসপাতালের ফেয়ার প্রাইস শপে অর্ডারও দেওয়া হয়েছে বলে জানান। আর ওয়ার্ডে বোতল ঝুলছে মানেই রোগীকে তা দেওয়া হয়েছে, এই তত্ত্বও মানতে নারাজ তিনি। জানান, যদি কোনও বোতল ঝুলতে দেখা যায়, তবে তা পুরোনো। ওই সংস্থার রিঙ্গার ল্যাকটেট কোনও ভাবেই যাতে ব্যবহার না হয়, শুক্রবার রাত থেকে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।