সংবাদদাতা, বহরমপুর: আলুর দামে মধ্যবিত্তের হেঁসেলে স্বস্তি মিলল। আলুর দাম নিম্নগামী হওয়ায় আলু তুলতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন চাষিরা। ব্যাপক আমদানি হওয়ায় প্রতিদিন দামের পতন ঘটছে। গত এক সপ্তাহে প্যাকেট প্রতি (৫০ কেজি) ৬৫০ টাকা দাম কমেছে। খুচরো বাজারে আলুর দাম কমায় খুশি মধ্যবিত্তরা। প্রতিদিনের আমদানি হওয়া আলু বিক্রি হচ্ছে না বলে ব্যবসায়ীরা জোরালো দাবি তুলেছেন। ব্যবসায়ীরা শনিবার থেকে চাষিদের প্যাকেট দেওয়া বন্ধ করেছেন। পাশাপাশি চাষিদের তাঁরা এই মূহূর্তে আলু তুলতে মৌখিকভাবে বারণও করছেন। ডাকবাংলা আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক আশিস ঘোষ বলেন, বর্ডার সিল করে দেওয়ায় ভিন রাজ্যে আলু রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। মুর্শিদাবাদে আলুর যা উৎপাদন, তা ভিন রাজ্যে পাঠাতে না পারলে আড়তেই পচবে। প্রতিদিন ৪০-৫০ টাকা হারে দাম কমায় চাষিদের লাভের অংশ কমছে। চাষিদের স্বার্থে রাজ্য সরকারের উচিত বর্ডার আপাতত খুলে দেওয়া। শুধু ঝাড়খণ্ডের বর্ডার খুললে অনেক সমাধান হবে। এবার প্রায় একসঙ্গে আলু চাষ হওয়ায় জানুয়ারির শুরু থেকে প্রচুর আলু উঠতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহ আগে যে আলু প্যাকেট প্রতি ১ হাজার ২৫০ টাকায় বিকিয়েছে, শুক্রবার চাষিরা সেই আলুর দাম পেয়েছেন ৬০০ টাকা বস্তা হিসেবে। শনিবার আরও ৫০ টাকা দাম কমবে বলেই আলু ব্যবসায়ীরা ইঙ্গিত দিয়েছেন। আলু ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে খবর, ডাকবাংলা আলুর মোকামে প্রতিদিন ২৫ হাজার প্যাকেট আলু আমদানি হচ্ছে। কিন্তু ভিন রাজ্যের খরিদ্দার ঢুকতে না পারায় সেই আলুর সিংহভাগ অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে। আলু ব্যবসায়ী সুনীল ঘোষ বলেন, আলুর দামের পতন যে হারে ঘটছে, তাতে চাষিদের উদ্বেগ বাড়ছে। প্রতিদিনের আমদানি হওয়া আলু বিক্রি করতে না পারায় আড়তে মজুত থাকছে। জের কাটছে না।প্রতিদিন সকালে চাষিদের মাঠে গুনতি করে ব্যবসায়ীরা প্যাকেট পৌঁছে দেন। চাষিদের আলু তুলতে বারণ করে শনিবার থেকে প্যাকেট দেওয়া বন্ধ করেছেন ব্যবসায়ীরা। বড়ঞার আলু চাষি কেরিম শেখ বলেন, ব্যবসাদাররা প্যাকেট দিচ্ছেন না। বাজার থেকে প্যাকেট কিনে আলু তুলেছি। এখন কীভাবে বিক্রি করব ভাবছি। আলু না তুললে দাম যে হারে কমছে, তাতে খরচার টাকাই উঠে আসবে না। আলুর দাম নামায় সাধারণ মানুষের হেঁসেলে স্বস্তি মিলেছে। শনিবার মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন বাজারে ২০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হয়েছে। স্বর্ণময়ী বাজারের সব্জি বিক্রেতা দীনেশ মণ্ডল বলেন, খুচরো বাজারে আলুর দাম আরও কমবে। সাধারণ মানুষের দাবি, রাজ্যবাসীকে সস্তায় আলু দেওয়া রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য হলে খুচরো বাজারে টাস্ক ফোর্সের নজরদারি বাড়ানো দরকার। চাষি ও খুচরো বাজারে আলুর দামের ফারাক কমাতে হবে। -নিজস্ব চিত্র