ন্যায্য দামে কিনতে নির্দেশ কৃষি বিপণন দপ্তরের, বেড়েছে ফলন, শাক ও সব্জির দাম কমায় মাথায় হাত কৃষকদের
বর্তমান | ১২ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শীতকালে আবহাওয়ার পরিস্থিতি ঠিকঠাক থাকায় শাক-সব্জির ফলন হচ্ছে ভালো। সে কারণে কমছে দাম। এর ফলে যদিও চাষিরা পড়ছেন ক্ষতির মুখে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের কৃষি বিপণন দপ্তরের ‘সুফল বাংলা’ কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে ন্যায্য দামে চাষিদের কাছ থেকে সব্জি কিনতে হবে। দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮৯টি ক্রয়কেন্দ্র থেকে একশো টনেরও বেশি সব্জি কেনা হয়েছে। এই প্রক্রিয়া চলবে। সব্জি ও আলু চাষিরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন তার জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রসঙ্গত, সরকারি উদ্যোগে কেনা সব্জি মূলত সুফল বাংলার স্টলে বিক্রি হয়। সাধারণ ক্রেতারা খুচরো বাজারের থেকে কম দামে পান।
সব্জির অতিফলন চাষিদের ফেলেছে সমস্যায়। সরকারি টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন, ‘ফলন এতটাই বেশি হচ্ছে যে, অনেক চাষি চাইছেন অসময়ের বৃষ্টি শুরু হোক। তাহলে মাঠে থাকা সব্জির কিছু অংশ নষ্ট হবে। তা হলে দাম বাড়বে। গ্রামের বিভিন্ন হাটে মাঝারি থেকে বড় আকারের ফুলকপি ও বাঁধাকপি পাঁচ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শিম, বেগুন থেকে শুরু করে শীতের অন্যান্য সব্জির দামও কমেছে। টাস্ক ফোর্সের তরফে নবান্নকে সব্জির পাইকারি দরের রিপোর্ট পাঠানো হয়। শুক্রবারের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, কলকাতার পাইকারি বাজারে ফুলকপির পিস ও প্রতি কেজি বাঁধাকপি আট থেকে ১২ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। টম্যাটো ১৬, বেগুন ২০, শিম ১৫, গাজর ২৪ টাকা ছিল প্রতি কেজি। হাটে এ সব সব্জির দাম ছিল আরও কম।
স্থানীয় নতুন আলু উঠতে শুরু করায় তার দামও কমছে। কলকাতার পাইকারি বাজারে নতুন আলুর কেজি প্রতি দাম ১৯ থেকে ২০ টাকা ছিল শুক্রবার। অধিকাংশ খুচরো বাজারে নতুন আলু এখনও ২৫ টাকা দামেই বিক্রি হচ্ছে বলে খবর। এবার আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম হু হু করে কমছে। আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা লালু মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে চাষিরা মাঠ থেকে প্রায় ১৭ টাকা দাম পাচ্ছিলেন। এখন তা ১৩ টাকায় নেমে আসছে। সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় এ রাজ্য থেকে ভিন রাজ্যে আলু পাঠানো যাচ্ছে না। পাঠাতে পারলে নতুন আলুর দাম বাড়ত। হিমঘর চালু রাখার সময়সীমা ৩১ডিসেম্বর শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন হিমঘরে মজুত প্রায় দেড় লক্ষ টন (৩০ লক্ষ বস্তা) আলু। তা সেখান থেকে ১২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা চাইছেন, সরকার নতুন আলু কিনে হিমঘরে রাখুক। তাতে চাষিরা বেশি দাম পাবেন।