জঙ্গি শাদের বাবার ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করেছিল মুর্শিদাবাদের একটি পঞ্চায়েত
বর্তমান | ১২ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাংলাদেশি জঙ্গি মহম্মদ শাদ রবি ওরফে সাহেবের বাবার বাংলাদেশে মৃত্যু হয়। কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু হয়েছিল মুর্শিদাবাদ থেকে। হরিহরপাড়ার স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে সেটি পেতে সাহায্য করে ধরা পড়া জঙ্গি মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা মিনারুল শেখ । তদন্তে নেমে এই তথ্য হাতে এসেছে অসম এসটিএফের। কোনও কিছু যাচাই না করেই পঞ্চায়েত কীভাবে এই শংসাপত্র ইস্যু করেছিল, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তদন্তকারীরা।
আনসারুল্লা বাংলা টিমের (এবিটি) জঙ্গি শাদকে জেরা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে আসা জঙ্গিদের বাবা বা মা এখানকার কোনও ঠিকানায় থাকে, তার সার্টিফিকেট জোগাড় করা। এরপর তাদের মধ্যে কেউ এদেশে মারা গিয়েছে, সেটি খাতায় কলমে নথিভুক্ত করানো। যাতে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরিতে কোনও সমস্যা না হয়। এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় হরিহরপাড়ার বাসিন্দা মিনারুল শেখকে। মিনারুল ঘর ভাড়া নেওয়ার প্রমাণ স্বরূপ আদালতের চুক্তিপত্র তৈরি করাত এলাকার বিভিন্ন মুহুরিকে ধরে, যাতে পাকাপাকিভাবে প্রমাণ করা যায় সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি জঙ্গির পরিবার অনেকদিন ধরে এদেশে আছে। তদন্তে উঠে এসেছে ভুয়ো নথি তৈরি করত মিনারুল ঘনিষ্ঠ মুহুরিরা। তারপর ওই জঙ্গির বাবা বা মা এদেশে মারা গেছে বলে একটা সার্টিফিকেট বের করত মিনারুল। এরফলে প্রমাণ করা সহজ হতো, তারা ভারতীয় নাগরিক। এই নথিগুলি হাতিয়ার করে আধার, প্যান ও পাসপোর্টের জন্য আবেদন করত বাংলাদেশি জঙ্গিরা। কাগজে কলমে নথি ঠিক থাকায় এবিটি জঙ্গিরা অনায়াসে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র পাসপোর্ট পেয়ে যেত।
শাদ অসম এসটিএফের জেরায় জানিয়েছে, ভারতে আসার আগে তার বাবার মৃত্যু হয় বাংলাদেশে। মুর্শিদাবাদে এসে সেই মিনারুলকে বলে তার বাবার ডেথ সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। সেটি না থাকলে পাসপোর্ট আবেদনের নথি যাচাইয়ের সময় বাতিল হয়ে যাবে। হরিহরপাড়ার একটি পঞ্চায়েত অফিস থেকে সেটি বের হয়। শাদের নির্দেশমতো মিনারুল এই রাজ্যে এবিটির হয়ে কাজ করা জঙ্গিদের এই নথিগুলি তৈরি করে দেয়। যে সমস্ত পঞ্চায়েত থেকে কোনও কিছু যাচাই না করেই এই সার্টিফিকেটগুলি ইস্যু করা হয়, সেখান থেকে অসম পুলিস তথ্য চাইছে বলে খবর।