• খসড়া ভোটার লিস্টে জল কেন, নিজেদের ব্যর্থতাই দেখছে পদ্ম
    এই সময় | ১২ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: খসড়া ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার খুঁজতে গিয়ে নিজেদের সাংগঠনিক ব্যর্থতাই দেখছেন বঙ্গ–বিজেপির একাংশ। খসড়া ভোটার তালিকা তৈরির সময়ে স্থানীয় বিজেপি নেতা–কর্মীরা কী করছিলেন, সেই প্রশ্নই দলের অন্দরে তুলছেন তাঁরা। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, খসড়া ভোটার তালিকায় ১৭ লক্ষের কাছাকাছি ভুয়ো ভোটার ঢুকিয়েছে তৃণমূল। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূল যদি খসড়া তালিকায় ভুয়ো ভোটার ঢুকিয়েই থাকে, তা হলে তখনই কেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বিজেপি কর্মীরা আপত্তি করেননি?

    রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সহ–সভাপতি রাজকমল পাঠকের বক্তব্য, ‘আশি হাজারের কাছাকাছি বুথ আছে আমাদের রাজ্যে। কিন্তু সিংহভাগ বুথে বিজেপির কোনও সক্রিয় সদস্যই নেই। তা হলে বাধাটা দেবে কে? তৃণমূল তো ফাঁকা মাঠে গোল দিয়েছে।’ সম্প্রতি খসড়া ভোটার তালিকায় থাকা ভুয়ো ভোটারদের নামের তালিকা নিয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অফিসে হাজির হয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি নেতারা।

    কমিশনে তাঁরা জানান, ভোটার তালিকায় ১৬ লক্ষ ৪১ হাজার ৪৪০ জন ভুয়ো ভোটারের নাম রয়েছে। অবিলম্বে এই ভুয়ো ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। ভুয়ো ভোটার ইস্যুতে বিজেপি নেতারা নিজেদের মধ্যে একাধিক রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেছেন। সেখানে অনেকেই এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ভোটার তালিকা থেকে ভুয়ো ভোটার ছাঁটতে না পারলে আগামী বিধানসভা ভোটে কোনও ভাবেই তৃণমূলকে পরাস্ত করা যাবে না।

    তবে নির্বাচন কমিশনের দরজায় বারবার কড়া নেড়ে আদৌ কতটা কাজ হবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে গেরুয়া ব্রিগেডের অন্দরে। বিজেপির এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘খসড়া ভোটার তালিকায় একবার নাম উঠে গেলে, সেই নাম ছাঁটা অনেক হ্যাপা। ভোটার তালিকা তৈরির সময়েই আমাদের সতর্ক থাকা উচিত ছি‍ল। এখন হা–হুতাশ করে কী লাভ।’

    গত লোকসভা ভোটের অাগেও একই অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারীরা। কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে লোকসভা ভোট মেটার পর অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি নেতারা। এ বারও যে খসড়া ভোটার তালিকায় ব্যাপক সংশোধন হবে, এমনটা মনে করছেন না বিজেপির অনেক নেতাই। তাঁদের যুক্তি, আসল কথা হলো সংগঠন। সেটা না থাকলে শাসকদল ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার ঢোকাবেই। নির্বাচন কমিশনের মুখ চেয়ে বসে না থেকে নিচুতলার সংগঠন মজবুত করার উপর জোর দেওয়া প্রয়োজন বলে তাঁরা মনে করছেন।

    রাজকমলের সুরে সুর মিলিয়ে বিজেপির এক প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদকের মন্তব্য, ‘খসড়া ভোটার তালিকা তৈরির সময়এ আমরা শীতঘুমে ছিলাম। তৃণমূল যা করার করে দিয়েছে। আমরা শুধু কান্নাকাটি করছি।’ রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘গতবার ভোটার তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে আমরা যতটা উদ্যোগী ছিলাম, এ বার ততটা ছিলাম না। আগামী বিধানসভা ভোট বিজেপির জ‍ন্য কঠিন হবে।’ রাজ্যসভায় বিজেপির সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘পরিচ্ছন্ন ভোটার তালিকা ২০২৬–এর আগে তৈরি হবে। আমরা বিষয়টির উপর নজর রাখছি।’

  • Link to this news (এই সময়)