এই সময়: বুথ বেশি। সক্রিয় সদস্য কম! এই ঘাটতি পূরণ করাই আপাতত বঙ্গ–বিজেপির কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, এ রাজ্যে ৮০ হাজারের কাছাকাছি বুথ রয়েছে। এ দিকে, বিজেপির অন্দরের পরিসংখ্যান বলছে, বুথপিছু একজন করেও সক্রিয় সদস্য নেই বিজেপির!
মোবাইলে মিসড কল দিয়ে রাজ্যের ৪০ লাখ মানুষ বিজেপির প্রাথমিক সদস্যপদ নিলেও সক্রিয় সদস্য মিলেছে এখন পর্যন্ত মাত্র ৩৭ হাজার! অর্থাৎ, টেনেটুনে বাংলায় দুটি বুথপিছু মাত্র একজন সক্রিয় সদস্য পদ্মের। এই সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে বিজেপি কী ভাবে বুথস্তরে মজবুত সংগঠন গড়ে তুলবে, তা নিয়ে ঘোর সংশয় তৈরি হয়েছে।
মিসড কল দিয়ে কতজন বিজেপির সদস্য হয়েছেন, তা ঘটা করে বিজেপির তরফে প্রচার করা হলেও গেরুয়া নেতারা বিলক্ষণ জানেন, প্রয়োজনে ‘মিসড কল সদস্যদের’ অধিকাংশকে খুঁজেও পাওয়া যাবে না। তাই বিজেপি নেতৃত্ব জোর দেয় সক্রিয় সদস্য বাড়ানোর উপর, যাঁদের দলের যে কোনও কর্মসূচিতে পাওয়া যাবে।
বিজেপির সক্রিয় সদস্য হওয়ার প্রাথমিক শর্ত হলো, অন্তত পঞ্চাশ জনকে দলের প্রাথমিক সদস্য করতেই হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজারের বেশি সক্রিয় সদস্য এ রাজ্যে বিজেপি পায়নি। শুক্রবার শেষ হচ্ছে বিজেপির সক্রিয় সদস্যদের তালিকা তৈরির ডেডলাইন। ফলে ৩৭ হাজার থেকে বেড়ে সংখ্যাটা ৪০ হাজারের বেশি যে হবে না, তা একরকম নিশ্চিত।
শুধু তা–ই নয়, রাজ্যের সব মণ্ডল, শক্তিকেন্দ্র, জেলা এবং রাজ্য সাংগঠনিক কমিটি তৈরি করতে গেলেও হাজার পঞ্চাশ সক্রিয় সদস্য প্রয়োজন। কিন্তু সেই সংখ্যা ৪০ হাজারের গণ্ডি পেরোতে না পারলে সব জায়গায় কমিটি গড়তেই হিমশিম খেতে হবে বঙ্গ–বিজেপি নেতৃত্বকে। দলের প্রাক্তন রাজ্য সহ–সভাপতি রাজকমল পাঠকের কথায়, ‘শুনছি এখন পর্যন্ত বাংলায় বিজেপির সক্রিয় সদস্যর সংখ্যা ৩৭ হাজারের কিছু বেশি। আমাদের রাজ্যে ৮০ হাজার বুথ রয়েছে। তা হলে অর্ধেক বুথেও আমাদের একজনও সক্রিয় সদস্য নেই!
প্রাইভেট কোম্পানির সেলসম্যানদের মতো বিজেপি নেতাদের টার্গেট দেওয়া বন্ধ না–হলে ভবিষ্যতে আরও সমস্যা হবে। আগে নিয়ম ছিল কেউ ২৫ জনকে দলের প্রাথমিক সদস্য করতে পারলেই তাঁকে সক্রিয় সদস্যপদ দেওয়া হতো। পরে নিয়ম বদলে করা হয়, অন্তত ১০০ জনকে প্রাথমিক সদস্য করতে হবে। সেটা আবার কমিয়ে এখন ৫০ করা হয়েছে। তাতেও লক্ষ্যপূরণ হচ্ছে না।’
বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘সক্রিয় সদস্য পার্টির গঠনতন্ত্রের বিষয়। ঠিক সময় বাংলার মানুষ বুথে বুথে বিজেপিকে দেখতে পাবে। বিজেপির বুথকর্মী এবং সক্রিয় সদস্যরাই এ রাজ্য থেকে তৃণমূলকে বিসর্জন দেবেন।’