• স্বামীজির নামাঙ্কিত স্কলারশিপে পড়াশোনা চালাচ্ছেন ওঁরা
    এই সময় | ১২ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের ছাত্রী বর্ণা মণ্ডল আর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী তানিয়া সুলতানারা দু’জনে দু’জনকে চেনেন না। কিন্তু ওঁদের জীবনের গল্পটা অনেকটা এক রকম। ওঁরা দুজনেই মেধাবী। আবার, চরম আর্থিক অনটন সত্ত্বেও পড়াশোনা চালাচ্ছেন। স্বপ্ন আরও বড় হওয়ার। বর্ণার স্বপ্ন, ফিজ়িক্সে গবেষণা করার। প্রেসিডেন্সি থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স করার ফাঁকেই সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তানিয়া।

    ওঁদের এই লড়াই–পথকে কিছুটা হলেও মসৃণ করেছে রাজ্য সরকারি একটি স্কলারশিপ। প্রতি বছর শুরুতেই নিয়ম করে ওই স্কলারশিপের টাকা ঢুকছে বর্ণা, তানিয়াদের অ্যাকাউন্টে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এই স্কলারশিপের নামকরণ করেছেন ‘স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ’।

    বেহালার বাসিন্দা বর্ণা ক্লাস টেনের পর থেকেই পাচ্ছেন এই স্কলারশিপের টাকা। স্কুলে পড়াকালীন বছরে ১২ হাজার টাকা পেতেন, এখন বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার টাকা। বর্ণার বাবা বাড়ি বাড়ি ঘুরে একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির জন্য ব্লাড কালেক্ট করেন। মা সংসারের দায়িত্ব সামলান। বর্ণার কথায়, ‘মাসিক ৯,০০০ টাকা আয় পরিবারে। ইচ্ছে থাকলেও আমাকে পড়ানোর সাধ্য মা–বাবার হতো কি না, জানি না। পড়াশোনার পথে এই স্কলারশিপের টাকাটাই এখন আমার মূল ভরসা। বইখাতা, যাতায়াতের গাড়িভাড়া, সেমেস্টার ফি— সবেতেই ভরসা এই টাকা!’

    বর্ধমানের বাসিন্দা তানিয়া উচ্চ মাধ্যমিকে নবম হয়েছিলেন। তারপর নবান্ন থেকে ফোন করে স্কলারশিপের ফর্ম পূরণ করানো হয়। তিন বছর গ্র্যাজুয়েশনের পর এখন মাস্টার্স করছেন। বছরে ২৪ হাজার টাকা স্কলারশিপ পাচ্ছেন। বাবা বেসরকারি চাকরি করেন।

    তানিয়ার কথায়, ‘আমরা যারা জেলায় থাকি, তাদের কলকাতায় থেকে পড়াশোনা করার পিছনে অনেক টাকা খরচ হয়। আমাদের কাছে তাই আরও বেশি জরুরি ছিল স্কলারশিপটা।’

    আজ, স্বামী বিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তীতে এ ভাবে তাঁরই নামাঙ্কিত স্কলারশিপের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন তানিয়াদের মতো বহু পড়ুয়া।

  • Link to this news (এই সময়)