বাঘিনি জি়নাত ফিরেছে তার ঠিকানায়। কিন্তু বাঘ-আতঙ্ক কিন্তু পিছু ছাড়ছে না পশ্চিমাঞ্চলের জেলায়। জ়িনাতের ফেরার পর নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল পুরুলিয়ায়। এ বার ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির গ্রামে নতুন করে বাঘের আতঙ্ক। রবিবার সকালে বেলপাহাড়িতে অজানা জন্তুর পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে বলে খবর ছড়ায়। গ্রামবাসীরা সেটা বাঘের বলেই মনে করছে। বেলপাহাড়ির মনিয়ার্ডি ও চিটামাটি গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই চিটামাটি পুরুলিয়ার একেবারে সীমানা ঘেঁষা গ্রাম।
রবিবার সকালে বেলপাহাড়ি ব্লকের মনিয়ার্ডি গ্রাম সংলগ্ন মাটি ও বালির রাস্তায় অজানা জন্তুর পায়ের ছাপ দেখতে পান দুই গ্রামবাসী। মনিয়ার্ডি ও চিটামাটি গ্রামের মাঝের জঙ্গল সংলগ্ন এই রাস্তা। বিষয়টি বনদপ্তরকে জানানো হলে তড়িঘড়ি সেখানে পৌঁছয় তারা। তবে এটি সত্যিই বাঘের পায়ের ছাপ নাকি অন্য কোনও জন্তুর তা এখনও স্পষ্ট নয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সকালে যাঁরা জঙ্গলে কুরকুট (লাল পিঁপড়েকে স্থানীয় ভাষায় এই নামেই ডাকা হয়) সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন, তাঁরা বাঘের মতোই দেখতে বিশাল পশুও দেখেছেন। মনিয়ার্ডি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তথা ওই এলাকার বাসিন্দা প্রেমানন্দ মুর্মু বলেন, ‘এ দিন সকাল তখন প্রায় সাড়ে ৯টা। মনিয়ার্ডি, চিটামাটি গ্রামের মাঝে যে জঙ্গল, সেখানে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে। গ্রামের দু’জন কুরকুট সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন, তাঁরা জঙ্গলের মধ্যে বড়, হলুদ রঙের ডোরাকাটা জন্তুও দেখেছেন। বনদপ্তরের লোকজন পৌঁছে বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।’
পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রামের সীমানাবর্তী গ্রাম চিটামাটি। চিটামাটি শেষ হলেই পুরুলিয়া জেলার শুরু। কিছু দিন আগে শোনা গিয়েছিল, ঝাড়খণ্ডের একটি বাঁধ চান্ডিল হয়ে পুরুলিয়া বর্ডার সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছে গিয়েছে। অনেকের ভয়, সেই বাঘই বেলপাহাড়িতে ঢুকে পড়ল না তো?
প্রসঙ্গত, ওডিশার সিমলিপাল থেকে কিছু দিন আগেই ঝাড়খণ্ড হয়ে ঝাড়গ্রামে ঢুকেছিল বাঘিনি জি়নাত। বেলপাহাড়ি হয়ে পুরুলিয়া, তারপর বাঁকুড়া। প্রায় দু সপ্তাহের ‘বেঙ্গল ট্যুরিজম’ সেরে আপাতত সে ওডিশায় পৌঁছেছে। তবে নতুন করে বাঘের আতঙ্ক আবার। আর এই আতঙ্ককে একেবারেই হালকা ভাবে নিতে নারাজ ঝাড়গ্রাম বন বিভাগ। ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, ‘আমরা এখনও নিশ্চিত নই। বিষয়টা খতিয়ে দেখে তার পরই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে।’
(তথ্য সহায়তা: অরূপকুমার পাল ও বুদ্ধদেব বেরা)