অন্যের আইডি-পাসওয়ার্ড ধার করে জাল আধার তৈরি! সীমান্তবর্তী সুতি থেকে ধৃত ৩
প্রতিদিন | ১২ জানুয়ারি ২০২৫
শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: অন্যের আধার কার্ডের নম্বর ব্যবহার করে ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরির চক্র চলছিল মুর্শিদাবাদের সুতিতে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার ভোররাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করল এসটিএফ। তাদের থেকে প্রচুর জাল পরিচয়পত্র ও নথি তৈরির মেশিন উদ্ধার হয়েছে।
আজ ভোররাতে সুতি থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নুরপুর এলাকায় একটি দোকানে অভিযান চালায়। ধৃতরা হল বড় কাকরামারির বাসিন্দা ইসমাইল শেখ, একই এলাকার বাসিন্দা আকবর আলি এবং আরাজি রমাকান্তপুরের বাসিন্দা মনোজকুমার মণ্ডল। অভিযোগ, জাল আধার কার্ড তৈরির চক্র চালাত তারা। বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রচুর আধার কার্ড এবং মেশিনপত্র। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুতিতে অন্যের আইডি দিয়ে গোপনভাবে জাল আধার কার্ড তৈরির কাজ চলত। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জঙ্গিপুর এসটিএফ হানা দেয়।
জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি ধৃত তিন ব্যক্তি জাল আধার কার্ড তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিল। এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত এবং কীভাবে জাল আধার কার্ড তৈরি করা হত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃত ব্যক্তিদের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করে আজই তাদের জঙ্গিপুর আদালতে পেশ করা হবে।”
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত তিন যুবক সম্প্রতি নূরপুর এলাকায় একটি দোকান ভাড়া নিয়ে জাল আধার কার্ড তৈরির ব্যবসা ফেঁদেছিল। ওই তিন ব্যক্তির আধার কার্ড তৈরির কোনও লাইসেন্স না থাকলেও অন্য একজনের কাছ থেকে বিপুল টাকার বিনিময়ে তারা আধার কার্ড তৈরির আইডি এবং পাসওয়ার্ড ‘ভাড়া’ নিয়েছিলেন। ধৃতদের ‘মোডাস অপারেন্ডি’ জানাতে গিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, আধার কার্ড তৈরির জন্য যতবার সিস্টেমে লগ ইন করতে হবে, আইডি এবং পাসওয়ার্ড যার নামে রয়েছে তাকে ততবারই স্ক্যানারে নিজের ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হবে। সেই কারণে ধৃত ব্যক্তিরা ‘সিন্থেটিক ল্যাটেক্স’ ব্যবহার করে এমন এক ব্যক্তির ফিঙ্গারপ্রিন্ট জাল করেছিলেন যার নামে সরকারিভাবে আধার কার্ড তৈরির লগ ইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড রয়েছে। ওই জাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করে তারা বারবার আধারের সিস্টেমে লগ ইন করতেন। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ধৃতরা যে আধার কার্ড তৈরি করেছে সেই ‘জাল’ কার্ডে তার ছবি এবং ঠিকানা থাকলেও ১২ সংখ্যার যে ইউনিক নম্বর ছাপা থাকত তা ইতিমধ্যেই অন্য কারও জন্য বরাদ্দ হয়ে রয়েছে।’
সম্প্রতি, অসম এবং রাজ্য পুলিশের এসটিএফ-এর যৌথ অভিযানে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া এবং নওদা থানা এলাকা থেকে ‘এবিটি’-র যে চারজন জঙ্গি গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের মধ্যে আব্বাস আলি নামে এক জঙ্গি বাংলাদেশের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ওই ব্যক্তি ভুয়ো নথি ব্যবহার করে ভারতীয় আধার এবং ভোটার কার্ড তৈরি করে ফেলেছিল। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সুতি থানা এলাকায় ভুয়ো আধার কার্ড তৈরির এই চক্রের কাছ থেকে কোনও বাংলাদেশি নাগরিক ইতিমধ্যে ভারতীয় আধার কার্ড তৈরি করে ফেলেছে কিনা তা এখন পুলিশকে ভাবাচ্ছে ।