এবার ‘নবান্ন চলো’ ডাক দেওয়া হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ‘নবান্ন চলো’ ডাক দেওয়া সেই পোস্টার। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে আগামী বৃহস্পতিবার ওই ‘নবান্ন চলো’ কর্মসূচি হবে। কিন্তু এই কর্মসূচি কে বা কারা করছে? এমন প্রশ্নই এখন উঠতে শুরু করেছে। কারণ ‘রাত দখল’ করার ডাক এভাবেই দেওয়া হয়েছিল। তারপর জানা যায়, কারা নেপথ্য রয়েছে এবং তাদের পরিচয় সামনে আসে। তবে এই কর্মসূচির ডাক কারা দিল সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। পোস্টারকে সামনে রেখে পিছনের মাথাদের জানতে এবার জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।
এই ‘নবান্ন চলো’ মিছিলের ডাক দেওয়া নেতৃত্বকারীদের পরিচয় জানতে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করলেন এক ব্যক্তি। ৬৫ বছরের এক প্রবীণ নাগরিক ভরতকুমার মিশ্র এই মামলা দয়ের করেছেন বলে কলকাতা হাইকোর্ট সূত্রে খবর। এখন আরজি কর হাসপাতালের মামলা একদিকে শিয়ালদা কোর্ট অপরদিকে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। আর তদন্ত করছে সিবিআই। তাছাড়া নির্যাতিতার বাবা–মা সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাহলে আবার কেন এমন মিছিলের ডাক? প্রশ্ন উঠছে। এখন জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে হাসপাতালগুলিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আবার কদিন পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডাক্তারদের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসে মনের কথা শুনবেন।
সেখানে পরিচয়হীন একটা মিছিলের ডাকের কোনও কারণ কেউ দেখতে পাচ্ছেন না। তাই এই কর্মসূচি ঠেকাতে উচ্চ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন ভরতকুমার মিশ্র। চলতি সপ্তাহে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি রয়েছে। মামলাকারীর প্রবীণ নাগরিকের বক্তব্য, ‘ওই কর্মসূচির ডাক দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টার ছড়ানো হয়েছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি দুপুর ১টার সময় ওয়েলিংটন স্কোয়ারে জমায়েত করতে বলা হয়েছে। সেখান থেকে মিছিল যাবে নবান্নের দিকে। ওই পোস্টারে স্লোগান দেওয়া হয়েছে, ‘রাত দখলের পর/আজ দাবি দখল’।
ওই মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, কারা এই ‘নবান্ন চলো’ কর্মসূচি ডাক দিয়েছে সেটা ওই পোস্টারে উল্লেখ নেই। এই কর্মসূচি কেন? এই কর্মসূচির অনুমতি পুলিশের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি ছাত্রসমাজের নামে নবান্ন অভিযান কর্মসূচি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। আক্রান্ত হয় পুলিশ। তাই এখন এই কর্মসূচির অনুমতি না থাকলে আবার আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা থাকছে। ১৫ জানুয়ারি গঙ্গাসাগর মেলা শেষ হবে। সুতরাং ১৬ জানুয়ারি ‘নবান্ন চলো’ কর্মসূচি হলে বিপাকে পড়বেন তীর্থযাত্রীরা। নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করুক আয়োজকরা। পুলিশের থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে অন্যত্র শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হোক। চলতি সপ্তাহে এই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্ট কী জানায় সে দিকে তাকিয়ে পুলিশ।