দুঃস্থদের চিকিৎসক ছিলেন তিনি। চিকিৎসার পর দক্ষিণা নিতেন মাত্র দু’টাকা। গোটা চুঁচুড়া জুড়ে নাম ছড়িয়ে পড়েছিল তাঁর। সারা জীবন অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন চুঁচুড়ার চিকিৎসক গৌরীশঙ্কর সুর। মানব সেবায় উৎসর্গ করা জীবন প্রদীপ নিভে যায় ২০০৮ সালে। স্বামীর স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি এ বার গরিবদের জন্যেই দান করে দিলেন তাঁর স্ত্রী।
চুঁচুড়ার শুঁড়িপাড়ায় তাঁর বাড়ির নাম ‘মৈত্রী ভবন’। যেখানে ডাক্তারের চেম্বার ছিল, সেই বাড়ির একতলা চুঁচুড়া শ্রমজীবী স্বাস্থ্য প্রকল্প সমিতিকে দান করলেন প্রয়াত চিকিৎসকের স্ত্রী শ্যামলী সুর। জনস্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র তৈরি হবে সেখানে। স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে মাত্র ১১ টাকায় চিকিৎসা পাবেন সাধারণ মানুষ। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রোগী দেখবেন। ইসিজি, ফিজিওথেরাপি করার সুযোগ মিলবে। আগামী দিনে এক্স-রে, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি-সহ অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবাও মিলবে।
গৌরী সুরের স্ত্রী শ্যামলী সুর বর্তমানে বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। ‘ডাক্তারবাবু’র স্মৃতি বিজড়িত বাড়ির কিছুটা অংশ যাতে দুঃস্থ মানুষের সেবায় কাজে লাগে সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিলেন তিন। শ্যামলী সুর বলেন, ‘মানুষ হিসেবে মানুষের জন্য কাজ করেছি। মানুষ আরও মানবিক হোক। ভালো কাজে এগিয়ে আসুক এটাই চাই।’
চুঁচুড়া শ্রমজীবীর সহ-সভাপতি অমল রায় জানান, চুঁচুড়া শ্রমজীবী সেবা প্রকল্পের প্রথম ইউনিটটি পাঁচ বছর আগে চালু হয়েছিল রাম মন্দির এলাকায়। সেখানে মাসে প্রায় ১০০ টি চেম্বার হয়। বহু মানুষ উপকৃত হন। আমাদের দ্বিতীয় ইউনিটটি চিকিৎসক গৌরীশঙ্কর সুরের বাড়িতে চালু হলো। এখানেও সব রকম রোগের চিকিৎসা করবেন ডাক্তাররা।