• বধূর মৃত্যুতে বিক্ষোভ, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ
    বর্তমান | ১৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, রবিবার, হাসপাতাল থেকে ছুটির আগেই কোনও একটি ওষুধ খাওয়ার পরই এদিন সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মৃতার নাম মামণি দলুই(২৫)। বধূ মৃত্যুর ঘটনায় এদিন মৃতার পরিবার সহ স্থানীয়রা চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে জরুরি বিভাগের সামনে বিক্ষোভ দেখান। সেসময় একজন নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে বিবাদ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে একজন মহিলা পুলিসকর্মী জখম হয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় মৃতার পরিবার চিকিৎসকের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলায় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এনিয়ে সিউড়ি থানার পুলিসের উপস্থিতিতে রোগীর পরিজনদের সঙ্গে বৈঠকও হয়। মৃতার দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। অবশেষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তাঁরা ফিরে যান।


    মৃত বধূ সদাইপুর থানার দুর্লভপুরের বাসিন্দা। বাড়িতে স্বামী সচীন দলুই ও দুই ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। পরিবার ও হাসপাতালের তরফে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার বিকালে বন্ধ্যাত্বকরণের জন্য ওই বধূকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। শনিবার তাঁর অস্ত্রোপচারও হয়। এদিন তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। তবে সকালে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তড়িঘড়ি তাঁকে ওয়ার্ড থেকে সিসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই তিনি মারা যান। এই ঘটনায় মৃতার পরিবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য মৃত্যুর কারণে জানতে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে। 


    মৃতার ভাই নয়ন দলুই বলেন, সকাল ১০টায় দিদিকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। ভুল ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। তার জন্যই দিদির মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পরই দিদিকে দেওয়া ওষুধ ও স্যালাইন সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা সেসব দেখতে চাই। মৃতার বাবা গৌতম দলুই বলেন, ছুটি লিখে দিয়েছিল। তার আগেই মেয়ের নাক দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। তিনিও মনে করছেন, চিকিৎসায় গাফিলতি রয়েছে। 


    এদিকে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে। তারপরই ঠিক হয়, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে হাসপাতালেই ময়নাতদন্ত হবে। তার ভিডিওগ্রাফিও করা হবে। এবিষয়ে অ্যাক্টিং সুপার সুব্রত গড়াই বলেন, ১০জন মা একসঙ্গে ভর্তি হয়েছিলেন।  শনিবার তাঁদের অস্ত্রোপচার হয়। সকলকেই একই ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। রাতের পর সকালেও ওই রোগী সুস্থ ছিলেন। স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়াও করেছিলেন। তবে আচমকাই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর পালস পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রয়োজনীয় চিকিত্সা করা হয়। কিন্তু রোগী মারা যায়। মৃতার পরিবারের তরফে গাফিলতির অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে নার্সিং স্টাফ ইনচার্জকে সমস্ত ওষুধ সিজ করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে কে কে দায়িত্বে ছিলেন সেই নামের তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।


    জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি বলেন, বধূর দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরই সবটা স্পষ্ট হবে। তদন্তও হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)