সবুজ বিশ্বাস, জঙ্গিপুর: গত কয়েকবছর ধরে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত স্বামী। বয়সজনিত অসুখে কোনও কাজই তিনি করতে পারেন না। একমাত্র ছেলেও বিকলাঙ্গ। ইটের দেওয়ালের উপর টালির ছাদ। এমন অবস্থায় প্রতিবেশীদের সাহায্যে সংসার চলে। আবাস যোজনায় ঘর নাপেয়ে প্রথমে হতাশ হন জ্যোৎস্না বিবি। তবে হাল ছাড়েননি। দিদিকে বলো নম্বরে ফোন করেন। সেখানেই অবস্থার কথা বলেন তিনি। আর তাতেই কাজ হয়। প্রশাসনের কর্তারা জ্যোৎস্নার বাড়ি দেখে যান। আবাসের তালিকায় নামও আছে। বৃহস্পতিবার তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। সরকারি টাকা পেয়ে অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত জ্যোৎস্নার পরিবারের সকলেই। খুশি প্রতিবেশীরাও।
সাগরদিঘি ব্লকের বিডিও সঞ্চয় সিকদার বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দু’টি পরিবারের নাম আবাস যোজনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাঁরা যোগ্য হিসেবেই বাড়ি পেয়েছেন। জানা গিয়েছে, সাগরদিঘির কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুরের হাবিবুর রহমান বিগত বছর তিনেক থেকে অসুস্থ। সেভাবে তেমন আর কোনও কাজই করতে পারেন না। এমন অবস্থায় স্ত্রী জ্যোৎস্না বিবিকেই সংসারে দায় দায়িত্ব মাথায় নিতে হয়েছে। কিন্তু তাঁদের মাথায় ছাদ নেই। আবাস যোজনায় বাড়িও পাননি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলেও কোনও লাভ হয়নি। মাস দু’য়েক আগেবাধ্য হয়েই দিদিকে বলো নম্বরে যোগাযোগ করেন তিনি।ফোন করেতাঁর অবস্থার কথা বলেন। ব্লক থেকে প্রতিনিধি দল এসে তাঁর বাড়ি পরিদর্শন করেন। তারপর নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। দু’দিন আগে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকাও ঢুকেছে। বাড়ির ৬০হাজার টাকা পেয়ে অত্যন্ত খুশি হাবিবুর রহমানের পরিবার। জ্যোৎস্না বিবি বলেন, নেতারা একটি নম্বর দিয়েছিলেন। দরকার ওই নম্বরে ফোন করলে সরকারি সাহায্য মিলবে বলেছিলেন। ঘরে সেই নম্বরটি রেখেছিলাম। তাতেই ফোন করি। আমার টাকা ঢুকেছে আমি দিদির কাছে কৃতজ্ঞ।
হাবিবুর সাহেব বলেন, আমি আগেগ্রামে ঘুরে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র বিক্রি করতাম। অসুস্থ হয়ে পড়ায় আর কিছু করতে পারিনা। আমার ছেলে ও মা-ও অসুস্থ। আমার পাকা ঘর নেই। ঝড়বৃষ্টি এলে ভয়ে ঘরে থাকতে পারিনা। অন্যের ঘরে চলে যেতে হয়। এবার আর অন্যের বাড়িতে যেতে হবে না।
অপরদিকে, ওই এলকারই মথুরাপুরের মুনসাদ আলিও দিদিকে বলো নম্বরে ফোন করে ঘরের টাকা পেয়েউচ্ছ্বসিত। বাড়ির তালিকায় নাম থাকলেও তা বাতিল হয়ে যায়। তারপর দিদিকে বলো নম্বরে ফোন করেন মুনসাদ সাহেব, তাতেই কাজ হয়। তিনি বলেন, আমি একটি কাঠের মিলে কাজ করি। বাড়ির তালিকা থেকেআমার নামটা বাদ হয়ে যায়। তারপর দিদিকে বলো নম্বরে কল করি। এখন ৬০ হাজার টাকা ঢুকেছে।