নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: পুরুলিয়া-১ এবং আড়শা ব্লকের সংযোগকারী কাঁসাই নদীর উপর বেলডি সেতুর একাংশ বসে গিয়েছে প্রায় দু’বছর আগে। তারপর থেকে বাসিন্দারা বহু বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। বহু ডেপুটেশন জমা দিয়েছেন প্রশাসনের কাছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বেলডি সেতু সংস্কারে হাত দেয়নি প্রশাসন। সেতুটি ‘বিপজ্জনক’ ঘোষণা করা হলেও রাতের অন্ধকারেই সেতুর উপর দিয়ে ভারী গাড়ি চলাচল করছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। কিন্তু কোনও নজর নেই প্রশাসনের।
স্থানীয় সূত্রের খবর, পুরুলিয়া-১ ও আড়ষা ব্লকের অন্তত ১০টি পঞ্চায়েতের মানুষ এই সেতুর উপর নির্ভরশীল। বাম আলমে তৈরি এই সেতুটি এমনিতেই সংস্কারের অভাবে ধুঁকছিল। তার উপর অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ফলে বছর দু’য়েক আগে বর্ষার সময়ে সেতুর কয়েকটি পিলার বসে গিয়ে বিপদ বাড়ে। ফলে, সেতুটি যান চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। সেতুটিকে ‘বিপজ্জনক’ ঘোষণা করেই দায় সারে জেলা প্রশাসন। কিন্তু সেটিকে সারানোর উদ্যোগ আর নেওয়া হয়নি। এদিকে, সেতু বিপজ্জনক হলেও দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়েই সাইকেল, বাইক নিয়ে সেতু পারাপার করছেন নিত্যযাত্রীরা। তবে, ভারী যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ছিল। তা নজরদারির ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত মাসখানেক ধরেই আর নজরদারির বালাই নেই। রাতের অন্ধকারে সেতু দিয়ে পারাপার করছে ট্রাক্টর, পণ্যবাহী গাড়ি। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বেলডি ও তার সংলগ্ন এলাকাগুলিতে প্রচুর ইটভাটা রয়েছে। দিনের বেলায় ইট বোঝাই করে অন্ধকার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করে ট্রাক্টরগুলি। তারপর সন্ধ্যা নামলেই অবাধে ভারী ট্রাক্টর সেতু পারাপার করছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এমনিতেই সেতু বসে গিয়েছে। তাও আমরা যাতায়াত করতে পারছি। সহজেই পুরুলিয়া যেতে পারছি। কিন্তু যেভাবে উত্পাত শুরু হয়েছে, সেতু একেবারে ভেঙে গেলে তো আরও বিপদে পড়তে হবে।
বেলডির বাসিন্দা বুদ্ধেশ্বর মাহাত বলেন, আগে এলাকায় পুলিসি নজরদারি থাকলেও বর্তমানে নেই। ধানের গাড়ি, ইটের গাড়ি পার হচ্ছে সেতু দিয়ে। এভাবে চলতে থাকলে তো আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। সেই বিপদের দায় প্রশাসন নেবে তো? বাসিন্দাদের দাবি, সেতুর উপর দিয়ে অবৈধভাবে গাড়ি যাতায়াত নিষিদ্ধ করুক প্রশাসন। সেইসঙ্গে দ্রুত বেলডি সেতু সংস্কারের ব্যবস্থা করা হোক। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেতুর একাংশ বসে যাওয়ায় আর সংস্কার সম্ভব না। ফলে, সেতুটি নতুন করেই তৈরি করতে হবে। যদিও তার জন্য যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন, তা ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, কীভাবে সেতু তৈরি করা যায় তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।