সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: ছুটি নিয়ে কর্মস্থল দার্জিলিং থেকে শনিবার কালচিনির দক্ষিণ লতাবাড়ি গ্রামে বাড়ি ফিরেছিলেন কনস্টেবল সিন্টু টিগ্গা (৪৫)। আর সেটাই যেন কাল হল তাঁর। রবিবার ভোরে বক্সার জঙ্গলের একটি দাঁতাল এসে পিষে দিল সিন্টুকে। সম্প্রতি কালচিনির মধু চা বাগানে হাতির হামলায় বনকর্মী মদন দেওয়ানের মৃত্যু হয়। এবার হাতির হামলায় প্রাণ গেল এক পুলিস কর্মীর। এনিয়ে মাত্র দেড় মাসেই তিন প্রৌঢ়া সহ জেলায় বন্যপ্রাণীর হামলায় নয় জনের মৃত্যু হল।
স্থানীয় এবং বনদপ্তর সূত্রে খবর, রবিবার ভোরে হঠাত্ নারকেল গাছ ভাঙার শব্দ সিন্টুবাবুর কানে আসে। তারপরেই ঘরের চালার উপর একটি নারকেল গাছ হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে দাদা পিন্টু টিগ্গাকে নিয়ে ঘর থেকে বের হন সিন্টুবাবু। টর্চ জ্বালিয়ে দেখেন সামনেই দাঁড়িয়ে গজরাজ। টর্চের জোরালো আলো চোখে পড়তেই হাতিটি পালিয়ে যান দাদা পিন্টু। সিন্টুবাবু পালানোর সময় হোঁচট খেয়ে মাটিতে পড়ে যান। তখনই হাতিটি পিষে দেয় তাঁকে। অদূরেই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের নিমাতি রেঞ্জ। কিন্তু বনকর্মীরা আসার আগে মৃত্যু হয় সিন্টুবাবুর। পরে হাতিটিও জঙ্গলের দিকে চলে যায়।
এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রাত বিরেতে দুয়ারে হাতি এসে তাণ্ডব করায় বনদপ্তরের টহল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই মৃতের পরিবারকে সরকারিভাবে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। জেলার পুলিস সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, খুবই দুঃখজনক ঘটনা। মৃত কনস্টেবলের পরিবারকে সবরকমভাবে সাহায্য করা হবে।
এনিয়ে গত মাত্র দেড় মাসে জেলায় হাতির হামলায় নয় জনের মৃত্যু হল। এর মধ্যে আবার মাত্র ২০দিনের ব্যবধানে মৃত্যু হয়েছে ছয় জনের। বনকর্মী মদন দেওয়ান ও পুলিস কর্মী সিন্টু টিগ্গা ছাড়া বাকি সাত জনের হাতির হামলায় মৃত্যু হয়েছিল জঙ্গলে জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ ও নদীতে মাছ ধরার সময়। এর মধ্যে বন্যপ্রাণীর হামলায় মৃত্যুর বড় ঘটনাটি ঘটেছিল ১৩ ডিসেম্বর। ওই দিন জঙ্গলে কাঠ সংগ্রহের সময় কালচিনির দক্ষিণ মেন্দাবাড়ি গ্রামের তিন প্রৌঢ়া সহ চার জনের মৃত্যু হয়েছিল।