• সুদ-পেনাল্টি মকুব,  প্রথম ৩ বছরের বকেয়া জিএসটি আদায় করতে উদ্যোগী রাজ্য
    বর্তমান | ১৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • বাপ্পাদিত্য রায়চৌধুরী, কলকাতা: ত্রুটিপূর্ণ এবং জটিল। ২০১৭ সালে জিএসটি চালু হওয়ার পর দেশজুড়ে এই ছিল কর ব্যবস্থাটির জন্য বাছাই করা বিশেষণ। কারণ, প্রথম অবস্থায় অনেকেই এই কর কাঠামো ঠিকমতো বুঝে উঠতে পারেননি। ফল? একদিকে বন্ধ হয়েছে বহু ক্ষুদ্র ব্যবসা। অন্যদিকে, টিমটিম করে সংস্থা চললেও বকেয়া পড়েছে জিএসটি। তার উপর লাগাতার চেপেছে সুদ এবং পেনাল্টি। এই ধাক্কা লেগেছে মূলত প্রথম তিনটি অর্থবর্ষে। ওই সময়ই বকেয়া এবং তার উপর চাপানো পেনাল্টির পরিমাণ লাগামছাড়া। এবার সেই বকেয়া আদায়েই শুরু হয়েছে উদ্যোগ। ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষ পর্যন্ত যাঁদের বকেয়া জিএসটি বাবদ ডিমান্ড নোটিস পাঠানো হয়েছিল, তাঁদের জন্য শুরু হল ‘অ্যামনেস্টি স্কিম’। এক্ষেত্রে ওই বকেয়া করের উপর যে সুদ এবং পেনাল্টি ধার্য করা হয়েছে, তা শর্তসাপেক্ষে মকুব হবে। তবে এই প্রকল্পের আওতায় আসতে গেলে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে জিএসটি বাবদ বকেয়া টাকা আগে মিটিয়ে দিতে হবে। তারপর আবেদন করা যাবে সুদ ও পেনাল্টি মকুবের জন্য। 


    ৫৩তম জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে ‘১২৮এ’ ধারা আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়, যেখানে পেনাল্টি ও সুদ মকুবের আইনি স্বীকৃতির সুযোগ করে দেওয়া হয়। সেই মতো রাজ্য সরকারগুলিও বিল আনে। সূত্রের খবর, রাজ্য জিএসটি দপ্তরের আওতায় যে করদাতারা আছেন, ওই নির্দিষ্ট তিনটি বছরে তাঁদের একাংশের কাছে বকেয়া করের অঙ্ক প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। তার জন্য নোটিস ধরানো হয়েছিল প্রায় ১৬ হাজার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে। তারা চাইলে এই স্কিমের আওতায় আসতে পারে। দপ্তর যেমন প্রকল্পটি সফল করতে অফিসারদের নিয়োগ করেছে, তেমনই জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে প্রচারপর্বও। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং অর্থদপ্তরের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত মুখ্যসচিব প্রভাতকুমার মিশ্র গত সপ্তাহে দপ্তরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে এই সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়েছেন। সরকারি আধিকারিকদের আশা, ওই প্রকল্প থেকে রাজস্ব বাবদ চলতি অর্থবর্ষেই রাজ্যের কোষাগারে কয়েকশো কোটি টাকা আসবে। 


    যারা এই স্কিমে আবেদন করবে, ২০২৫ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে আগে তাদের জিএসটি জমা করতে হবে। এরপর ৩০ জুনের মধ্যে আবেদন করতে হবে পেনাল্টি ও সুদ মকুবের জন্য। যারা ইতিমধ্যেই পেনাল্টি ও সুদ মিটিয়ে দিয়েছে, তারা তা ফেরতের জন্য আর আবেদন করতে পারবে না। জিএসটি প্রতারণার মতো কেসে যাদের নোটিস ধরানো হয়েছিল, তারা এই প্রকল্পের সুযোগ নিতে পারবে না। 
  • Link to this news (বর্তমান)