• শিশু-কিশোররা ব্যস্ত মোবাইলে! ঘুড়িহীন আকাশ, জয়নগর-দক্ষিণ বারাসতে পৌষ সংক্রান্তির আনন্দ ফিকে
    বর্তমান | ১৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: হাতে মোবাইল। তাতে গুচ্ছের গেমস। ফলে খেলার মাঠ পড়ে থাকে ফাঁকা। শিশু-কিশোররা ঘাড় গুঁজে মন দিয়ে মোবাইল ঘাঁটে। কিছুকাল আগেও পৌষ সংক্রান্তির এই সময়কলে আকাশ ভরে থাকত ঘুড়িতে। মুহুর্মুহু কানে আসত ‘ভোকাট্টা’ চিৎকার। এখন আকাশ ফাঁকা। আওয়াজও শোনা যায় না। ঠিক এই সময় জয়নগর ও দক্ষিণ বিষ্ণুপুরজুড়ে ঘুড়ি ওড়ানোর জমজমাট চল ছিল। এখন তা প্রায় উঠে গিয়েছে। হাতে গোনা কয়েকজন বিক্রেতা দোকান খুলে ঘুড়ি বিক্রি করছেন। কিন্তু বিক্রি তলানিতে বলে জানালেন। আক্ষেপ করে বললেনও, ‘সবাই এখন মোবাইল গেম নিয়ে ব্যস্ত। ঘুড়ি ওড়াবে কখন?’ 


    জয়নগরের গঞ্জেরবাজারে গিয়ে দেখা গিয়েছে, কাগজ ও প্লাস্টিকের বাহারি ঘুড়ি ও সুতো দোকানে সেজে বসে রয়েছে। বিক্রেতারাও হাপিত্যেশ করে বসে। কিন্তু কেনার লোকজন বিশেষ নেই। বিক্রেতা বাবু দাস, রাখাল বর, বাপি হালদার বলেন, ‘আগে এ সময় নাওয়া খাওয়া ছেড়ে ঘুড়ি, সুতো, লাটাই কিনতে মার্কেট ছুটতে হতো। কিনে আনার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি। এ বছর পরিস্থিতি খুব খারাপ। কেনাকাটা একেবারে তলানিতে।’ আগে জয়নগর শহরের বিভিন্ন জায়গায় মাঠে বা বাড়ির ছাদ থেকে ঘুড়ি উড়ত। লড়াই দেখা যেত। এখন এ ছবি উধাও। এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, ‘আগে সংক্রান্তির আগে থেকেই প্রচুর ঘুড়ি উড়ত। এখন আর বাচ্চাদের আগ্রহ নেই। শুধু কয়েকজন বয়স্ক ব্যক্তি ইচ্ছে হলে হয়ত একটু আধটু ওড়ান।’


    অন্যদিকে জানা গিয়েছে, এই চত্বরে যেটুকু ঘুড়ি ওড়ানো হয়, তার জন্য নাইলন সুতো ব্যবহার করেন সবাই। কারণ সাদা মোম সুতো উৎপাদন হয় না। নাইলন সুতো ওড়াতে গিয়ে আঙুল কেটে যায়। ঘুড়ি কেটে মাটিতে পড়ার সময় নাকমুখ কেটে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। সে কথা মাথায় রেখে এবার নাইলন মোম সুতো বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। কিন্তু কেনার চাহিদা নেই বলেই জানালেন। তবে ব্যবসায়ীদের আশা, সংক্রান্তি আসতে কয়েকদিন বাকি। শেষবেলায় বিক্রি একটু বাড়তে পারে। তাহলে কিছু অন্তত লাভের মুখ দেখতে পারবেন।
  • Link to this news (বর্তমান)