এই সময়: বাতাসে দূষণের মাত্রা ঠেকাতে গাছের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ আগেই নিয়েছে বিধাননগর পুরনিগম। উড়ালপুলেও তৈরি হচ্ছে ঝুলন্ত উদ্যান বা ভার্টিকল গার্ডেন। তবে, যে ভাবে শহরে গাড়ির সংখ্যা ও নির্মাণ বাড়ছে এবং একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ে গাছের সংখ্যা কমছে, তাতে পুরনিগমের একার পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয় — দাবি বিশেষজ্ঞদের।
তা মাথায় রেখে সবুজায়নের লক্ষ্যে বেসরকারি সংস্থাকে সামিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিধাননগর পুরনিগম। শহরের বিভিন্ন প্রান্তের ফাঁকা জায়গা, উড়ালপুল, বড়-বড় বিল্ডিংয়ে সবুজায়নের পাশাপাশি তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিক বেসরকারি সংস্থাগুলি — চাইছে পুরনিগম। সেই লক্ষ্যেই খুব তাড়াতাড়ি বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের বৈঠকে ডাকা হচ্ছে।
পুরসভার পরিবেশ বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা অনেক আগে থেকেই সবুজায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। আমরা চাইছি, সকলেই এগিয়ে আসুন। না হলে দূষণ ঠেকানো সমস্যার হবে।’ ওই বৈঠক থেকে শহরের কোথায়-কোথায় গাছ লাগানোর মতো জায়গা রয়েছে, কোথায় গাছ লাগানো সম্ভব, সে বিষয়ে আলোচনা হবে। এ ক্ষেত্রে উদ্যোগী হলে নানা ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলি ছাড় পাবে।
তাই এতে ভালো সাড়া মিলবে বলেই মনে করছেন পুরনিগমের পরিবেশ বিভাগের কর্তারা। এক কর্তা বলেন, ‘শহরজুড়ে আমরা অনেক গাছ লাগিয়েছি। প্রতি বছরই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়। কিন্তু, পুরনিগমকে রাস্তা থেকে শুরু করে জল সরবরাহ, নিকাশি, অলো সব দিকেই নজর রাখতে হয়। তাই বেসরকারি সংস্থাগুলি বিধাননগর পুরনিগমের অধীনে থাকা সমস্ত এলাকা সবুজের চাদরে মুড়তে কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) ফান্ড থেকে উদ্যোগ নিলে শহরবাসী উপকৃত হবেন।’
উম্পুনে প্রায় ৬ ফুটের বেশি উচ্চতার সাড়ে চার হাজার গাছ হারিয়েছে বিধাননগর পুরনিগম। প্রতি বছরই ঝড়ের কারণে গড়ে ৫০০–র বেশি গাছ নষ্ট হয়, এমনটাই পুরনিগম সূত্রে খবর। সে কারণেই বনসৃজনের পাশাপাশি গাছের রক্ষণাবেক্ষণের উপরও গুরুত্ব দিতে চাইছে পুরনিগম। বছর দুয়েক আগে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পক্ষ থেকে অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক কম, মাত্র ১০ হাজার গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে ওই গাছ যাতে বাঁচিয়ে রাখা যায়, তার জন্য রক্ষণাবেক্ষণে পর্ষদ একটি পেশাদার সংস্থাকে নিয়োগ করে। পুরনিগমও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছে সেই আর্জি রাখবে — এমনটাই ঠিক হয়েছে। বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) রহিমা বিবি বলেন, ‘যে সংস্থা এই সবুজায়নের কর্মসূচিতে সামিল হবে, তাদের বাঁশের বেড়া দিয়ে গাছের চারপাশ ঘিরে দিতে হবে এবং জল দেওয়া থেকে শুরু করে প্রয়োজনে ডালপালা ছাঁটা-সহ যাবতীয় কাজ করতে হবে।’