এই সময়: রাতের শহর। মাঝেমধ্যেই রাস্তা বন্ধ রেখে কাজে নামেন র্কমীরা। কখনও বিদ্যুৎ সংক্রান্ত খুঁটিনাটি কাজ সারেন সিইএসই–কর্মীরা। কখনও মাটি খুঁড়ে কাজ করে বিএসএনএল। এ ছাড়াও বিভিন্ন মোবাইল পরিষেবার সঙ্গে জড়িত সংস্থাও রাতের শহরে কাজে নামে। তাতে কারও সন্দেহ হওয়ার কথা নয়।
এরাও কাজ করছিল। শনিবার রাতে, বেহালা ছাড়িয়ে জোকায়। সঙ্গে মাটি খোঁড়ার ভাইব্রেটর মেশিন, নিরাপত্তা সরঞ্জাম ও একটি ছোট পণ্যবাহী গাড়ি। তাতে লেখা ‘বিএসএনএল’। পুলিশ যখন পৌঁছয়, ততক্ষণে ভাইব্রেটর মেশিন দিয়ে মাটি খুঁড়ে বের করে ফেলা হয়েছে। পুলিশ গিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন করতেই ঝুলি থেকে বেরিয়ে আসে বেড়াল। জানা যায়, যে জনা দশেক লোক সেখানে মাটি খুঁড়ে বিএসএনএল–এর তার বার করে এনেছিল, তারা কেউই বিএসএনএলের কর্মীই নয়। সেই আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল, গাড়ি, ভাইব্রেটর–সহ ১০ জনকে হরিদেবপুর থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে গ্রেপ্তারও করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, এরা সকলেই বিহারের লোক। জানে, শহরের বিভিন্ন রাস্তায় রাতের অন্ধকারে, যান চলাচল প্রায় স্তব্ধ হলে কাজে নামেন বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরা। রাস্তা খুঁড়ে চলে সারাইয়ের কাজ। গাড়ি, সরঞ্জাম এনে তাঁরা কাজ করে চলে যান। কেউ কোনও প্রশ্নই করেন না। পুলিশের কথায়, এই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছিল এরা। অন্য বড় শহরেও ভুগর্ভস্থ তার চুরি করেছে এই চক্রের সদস্যরা। কলকাতা শহরে এর আগে তারা কতবার মাটি খুঁড়ে বিএসএনএল অথবা অন্য সংস্থার তার চুরি করেছে, তার খোঁজ করছে পুলিশ। চক্রের মাথা পলাতক।
পুলিশের কাছে এই চুরির কথা জানায় বিএসএনএল–ই। শনিবার সংস্থার বেহালা ও জোকার বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়ার হরিদেবপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তিনিই জানান, ওই এলাকায়, রাতের অন্ধকারে রক্ষণাবেক্ষণের নামে রাস্তা খুঁড়ে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন ব্যক্তি প্রচুর পরিমাণে ভূগর্ভস্থ তার চুরি করেছে।
এরপরেই যে সব এলাকা থেকে এই তার চুরির অভিযোগ আসে সেখানে পৌঁছে যায় পুলিশ। গ্রেপ্তার করে দশজনকে। এই চুরির পিছনে বিএসএনএলের কোনও কর্মী জড়িত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, কোন কোন জায়গায় মাটির তলা দিয়ে বিএসএনএলের তার গিয়েছে সেটা সবার তো জানার কথা নয়।