এই সময়: তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় ঐক্যে ফাটল ধরানো, স্বেচ্ছাচারী কাজকর্মের কারণেই আরাবুল ইসলাম ও শান্তনু সেনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে ইঙ্গিত দিলেন ফিরহাদ হাকিম। যদিও নির্দিষ্ট ভাবে শান্তনু অথবা আরাবুলের মধ্যে কে দলের ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করেছেন আর কে–ই বা স্বেচ্ছাচারী কাজ করেছেন, তা স্পষ্ট করেননি তৃণমূলের দু’টি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সদস্য ফিরহাদ।
তৃণমূলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার শুক্রবার ছোট্ট একটি ভিডিয়ো বার্তায় শান্তনু ও আরাবুলকে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সাসপেন্ড করেছে বলে জানিয়েছিলেন। যদিও সাসপেনশনের কারণ জানাননি। ফিরহাদের কথায় এই প্রথম দুই নেতার সাসপেনশনের কারণ নিয়ে দলীয় স্তরে কিছুটা আভাস মিলল বলে তৃণমূল নেতাদের একাংশের বক্তব্য। স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকীতে রবিবার চেতলায় বিবেকানন্দের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন কলকাতার মেয়র।
সেখানেই তিনি বলেন, ‘তৃণমূল শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। দল ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে। জাতীয়তাবাদ ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে। দলে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। দু’–একজন যাঁরা দলের সেই নীতি অথবা সেই ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করবেন, স্বেচ্ছাচারিতার চেষ্টা করবেন, দল নিশ্চিত ভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে ও নেবে।’
শাস্তির খাঁড়া নেমে আসার পরে সরব হয়েছিলেন শান্তনু। সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা করেছেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে ফিরহাদের বক্তব্য, ‘আমি নির্দিষ্ট ভাবে কারও নামে বলব না। দলে একটি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি আছে। নেত্রী নিজে সব জায়গায় নজর রাখেন। সেইমতো আমাদের দল চলে। কে কী বললেন, কার কী মন্তব্য, দলের কাছে তার কোনও তাৎপর্য নেই।’ ফিরহাদের এ দিনের বক্তব্য নিয়ে শান্তনুর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘আমি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’ আরাবুলও কোনও মন্তব্য করেননি।
ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, স্বেচ্ছাচারী মনোভাব ত্যাগ করে তৃণমূলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। তাঁর কথায়, ‘তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আছে, এটাই সব নয়। তৃণমূল মানে দলনেত্রীর আমরণ লড়াই। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে থাকতে হবে। মানুষকে সবথেকে উপরে দেখতে হবে। উনিও (দলনেত্রী) সেটা আশা করেন। আমরা যদি কেউ তা না–করি (উনি) দুঃখ পান। ওঁর সারা জীবনের ত্যাগের মধ্যে দিয়ে এই দল সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের রক্ত, জীবনের বিনিময়ে দল সৃষ্টি হয়েছে, এটা ভেবে (সবাইকে) কাজ করতে হবে।’
ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লার সঙ্গে আরাবুলের বিবাদের কারণে ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে তৃণমূলের একাংশ মনে করছে। ফিরহাদ যে দলের ঐক্য–বিরোধী কাজের ইঙ্গিত দিয়েছেন, তা আরাবুলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে বলে তৃণমূলের একাংশের পর্যবেক্ষণ। অতীতেও দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে আরাবুল শান্তির মুখে পড়েছিলেন।