বিল্ডিংয়ের কাচ ভেঙে পড়ে দুই পড়ুয়ার আহত হওয়ার ঘটনায় কাঠগড়ায় দক্ষিণ কলকাতার নব নালন্দা স্কুল। সোমবার দক্ষিণ কলকাতার এই স্কুল বিল্ডিংয়ের কাচ ভেঙে পড়ে অষ্টম ও নবম শ্রেণির দুই পড়ুয়ার মাথায়। একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও প্রিয়ম দাস নামে ছাত্রটির চোট গুরুতর। তার মাথায় ও ঘাড়ে প্রায় ২০-২১টি সেলাই পড়েছে বলে খবর। অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত গাফিলতি স্বীকার করলেন স্কুলের প্রিন্সিপাল অরিজিৎ মিত্র।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রিন্সিপাল বলেন, ‘আমাদের একটাই গাফিলতি ছিল, অ্যাম্বুল্যান্স সঠিক সময়ে আসেনি। ফার্স্ট এইড এবং অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা রয়েছে এমন স্কুলগুলির মধ্যে আমরা অন্যতম। কিন্তু তা দেরিতে আসায় উত্তেজিত হয়ে পড়েন অভিভাবকেরা। প্যানিক ছড়িয়ে পড়ে। শিশুটির মাথায় সেলাই পড়েছে তবে আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। আমরা সম্পূর্ণরূপা নজর রাখছি গোটা পরিস্থিতির উপর।’ প্রিন্সিপালের আরও সাফাই, ‘সব দুর্ঘটনার উপর সবার সব সময়ে হাত থাকে না। এটি একটি দুর্ঘটনা। স্কুলে রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট তৎপর। আগামিদিনেও রাখব। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর দায়িত্ব আমার। আপনারা নির্ভয়ে বাচ্চাদের কাল থেকে স্কুলে পাঠাতে পারেন।’
স্কুল ভবনের চার তলার ৫০৩ নম্বর ঘরের জানালাটি বন্ধ ছিল। সেটি আচমকাই এক পড়ুয়া খোলার চেষ্টা করে বলেই কাচটি ভেঙে পড়েছে। এমনটাই দাবি প্রিন্সিপাল অরিজিৎ মিত্রের। তিনি বলেন, ‘দোষ যদি কারও হয়ে থাকে তবে তা আমার। যে জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানে নেট লাগানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে যাতে এমনটা আর ভবিষ্যতে না ঘটে।’
জানা গিয়েছে, নব নালন্দা স্কুলের নিজস্ব দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। দু’জন চালকও রয়েছেন। তবে এ দিন নির্দিষ্ট সময়ে অ্যাম্বুল্যান্স অমিল ছিল। অসুস্থতার জন্য অনুপস্থিতি ছিলেন চালকও। ফলে এই পরিস্থিতিতে অন্য চালককে ডেকে পাঠাতে হয়। এতে জখম ছাত্রদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বেশ দেরি হয়। যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন অভিভাবকরা। সুরক্ষা নিয়ে কাঠগড়ায় তোলা হয় নব নালন্দা কর্তৃপক্ষকে। অভিভাবকদের বক্তব্য, স্কুলে ক্লাস চালু হয় সকাল ৭টা ১৫ থেকে। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা পাওয়া যায় ৮টা থেকে। এর মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে গেলে কী হবে, প্রশ্ন তাঁদের।
অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রিন্সিপাল অরিজিৎ মিত্র। তাঁর বক্তব্য, এগুলি স্কুলের ভিতরকার বিষয়। অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করে মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।