• তিন পুরসভায় সাত বছর ধরে বন্ধ নির্বাচন, ক্ষোভ বাড়ছেই
    এই সময় | ১৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • সঞ্জয় চক্রবর্তী ■ শিলিগুড়ি

    শেষ নির্বাচন হয় ২০১৭ সালে। তার পরে আর নির্বাচন হয়নি পাহাড়ের তিন পুরসভা— কার্শিয়াং, কালিম্পং এবং মিরিকে। ২০২২ সালে পুরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে এখন প্রশাসক বসিয়ে পুরসভার জরুরি পরিষেবা চালু রাখা হয়েছে। কিন্তু রেসিডেনশিয়াল সার্টিফিকেট থেকে শুরু করে ভাতা সংক্রান্ত আবেদন নিয়ে ঘোর বিপাকে পাহাড়ের তিন পুর এলাকার বাসিন্দারা।

    কেন নির্বাচন হচ্ছে না তারও কোনও সদুত্তর নেই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস কিংবা পাহাড়ের শাসকদল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কাছে। পাহাড়ের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা মিরিক পুরসভার প্রশাসক এল বি রাই বলেন, ‘কবে নির্বাচন হবে, সেই ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। রাজ্য নির্বাচন কমিশনই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে যেদিনই নির্বাচন হোক, আমরা প্রস্তুত।’

    কালিম্পং পুরসভার চেয়ারম্যান তথা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতা রবি প্রধান বলেন, ‘আমি যত দূর জানি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে আগামী মার্চে নির্বাচন হতে পারে। তবে আমরাও প্রস্তুত।’ বিরোধীরা অবশ্য মনে করছেন, হেরে যাওয়ার ভয়েই শাসকদল নির্বাচন এড়িয়ে যাচ্ছে। পথে নামার প্রস্তুতিও নিচ্ছে বিজেপি।

    দলের পাহাড়র কমিটির সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান বলেন, ‘২০২২ সালে পুরসভাগুলির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তার পরে জিটিএ, পঞ্চায়েত, লোকসভা নির্বাচন হয়ে গেল। পুরসভা নির্বাচন নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন কথা বলছে না। এমন চলতে থাকলে পথে নেমেই প্রতিবাদ জানানো হবে।’

    ২০১৭ সালের নির্বাচনে মিরিক পুরসভা তৃণমল কংগ্রেসের হাতে গেলেও দার্জিলিং, কালিম্পং ও কার্শিয়াংয়ে জয়ী হয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বিমল গুরুং তখন গ্রেপ্তারি এড়াতে অন্তরালে চলে গিয়েছেন। একে একে বাকি পুরসভাগুলি অনীত থাপার দিকে ঢলে পড়ে। ইতিমধ্যে দার্জিলিং পুরসভায় এমনই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় যে, সেখানে পুরবোর্ড ভেঙে দিয়ে নতুন করে নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে জয়ী হয় সদ্য গজিয়ে ওঠা হামরো পার্টি। জিএনএলএফ অজয় এডওয়ার্ডস তখন হামরো পার্টি তৈরি করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অজয় এডওয়ার্ডস ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেননি। দার্জিলিং পুরসভা শেষ পর্যন্ত অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার দখলে চলে আসে।

    কিন্তু ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে পুর পরিষেবা বেহাল বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। কার্শিয়াংয়ের বাসিন্দা সন্তবীর বিশ্বকর্মা বলেন, ‘পুরসভা অনেক কিছু করতে পারত। কিন্তু দলাদলির জন্য কিছুই হয়নি। নতুন করে নির্বাচন না-হলে হয়তো নতুন কিছু ভাবাও সম্ভব নয়।’

  • Link to this news (এই সময়)