• গোরু চুরির অভিযোগে গণপিটুনি, মৃত্যু যুবকের
    এই সময় | ১৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, বর্ধমান: গোরু চুরির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটল মেমারিতে। শনিবার রাতে মেমারি ১ ব্লকের আমাদপুর পঞ্চায়েতের মেরুয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। পিটিয়ে মারার অভিযোগে ৪ গ্রামবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বর্ধমান দক্ষিণের এসডিপিও অভিষেক মণ্ডল বলেন, ‘গোরু চুরি করতে এসে গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে মৃত ব্যক্তির পরিচয় রবিবার রাত পর্যন্ত পুলিশ জানতে পারেনি। জানার চেষ্টা চলছে। ওই ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগে গ্রামের ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের সোমবার আদালতে পেশ করা হবে।’

    গত দু’মাসে মেমারি ১ ব্লকের মেরুয়া গ্রামে গোরু চুরির বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। পুলিশকে জানানো হলেও চুরি যাওয়া গোরু উদ্ধার করা যায়নি। গোরু বাঁচাতে এর পর রাত পাহারার ব্যবস্থা করে গ্রামবাসী। মেমারি থানার টহলদারি ভ্যান ঘুরতে শুরু করে গ্রামে। এতে কয়েকদিন বন্ধ থাকে গোরুচুরি। কিন্তু, দিন দুয়েক আগে ফের গোরু চুরি হয়। তার পর থেকে অনেকেই চুরি আটকাতে গোয়ালে রাত কাটাতে থাকেন।

    তেমনই শনিবার নিজের গোয়ালে শুয়েছিলেন সৌমেন মাঝি। গ্রামবাসীর দাবি, গভীর রাতে গোরু চুরি করতে আসে চার জনের একটি দল। গোয়াল থেকে গোরু তুলে নিয়ে গাড়িতে ওঠানোর সময়ে ঘুম ভেঙে যায় সৌমেনের। তিনি চিৎকার করে ওঠেন। বাকিরা পালিয়ে গেলেও এক জনকে ধরে ফেলেন সৌমেন। তাঁর চিৎকারে ততক্ষণে চলে আসে গ্রামবাসী। অভিযোগ, রাতভর চলে গণধোলাই। ভোরে প্রহৃত ব্যক্তিকে মেমারি হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। সেখানে কিছু পরেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির।

    পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন রাত ২টো নাগাদ গাড়ি নিয়ে গ্রামে হানা দিয়েছিল চোরেরা। গ্রামবাসী বুলবুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের গ্রামে গত ২ মাসে বেশ কয়েকটি গোরু চুরি গিয়েছে। রাত পাহারা, পুলিশি টহলদারির পরেও দু’দিন আগে সৌমেনদের একটি গোরু চুরি যায়। তাই ওরা রাতে গোয়ালঘরে শুয়েছিল।’ রাতে গোরুর দড়ি খুলে নিয়ে যাওয়ার সময়ে ঘুম ভেঙে যায় সৌমেনের।

    বুলবুল বলেন, ‘ও চোরেদের তাড়া করে। চিৎকার শুনে গ্রাম পাহারায় থাকা কয়েকজন ছুটে আসে। শুনেছি, গোরুচোররা ৫-৬ জন ছিল। রাস্তা ধরে পালানোর সময়ে এক জন ধরা পড়ে যায়। তার পর গ্রামের সবাই মিলে মারধর করেছে।’

    এখনও পর্যন্ত গ্রাম থেকে ২০-২৫টি গোরু চুরি গিয়েছে জানিয়ে আর এক গ্রামবাসী মহাদেব ঘোষ বলেন, ‘ভোর পর্যন্ত মারধর করা হয়। এত মার খেয়েও নাম, ঠিকানা কিছু বলেনি। সকালে পুলিশ এসে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’ গ্রামবাসী জানিয়েছে, গোরুচোরেরা নিজেদের মধ্যে হিন্দিতে কথা বলছিল। পুলিশের অনুমান, ভিনরাজ্যের কোনও দল এই চক্রে থাকতে পারে।

  • Link to this news (এই সময়)