অর্নবাংশু নিয়োগী: বিষাক্ত স্যালাইন ব্যবহারের ফলেই মৃত্য়ু হয়েছে মেদিনীপুরের প্রসূতির। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি স্বাস্ত্য দফতরের নিষেধাজ্ঞার পরও বহু সরকারি হাসপাতালের ব্যবহার হচ্ছে রিংগার ল্যাকটেট স্যালাইন। এনিয়ে এবার জোড়া মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে।
ওই জোড়া মামলা একটি করেছেন কৌস্তভ বাগচী এবং অন্যটি করেছেন বিজয় সিংহল। মামলায় দাবি করা হয়েছে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে ওই স্যালাইন প্রস্তুতকারী সংস্থাকে নিষিদ্ধ করে কর্ণাটক সরকার। তার পরেও এরাজ্যে কীভাবে সেই স্যালাইন ব্যববার করা হচ্ছে? এর জন্য তদন্তের প্রয়োজন। আাগামী বৃহস্পতিবার মামলাটির শুনানি রয়েছে।
উল্লেখ্য, মামলাকারীদের দাবি মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ও কলকাতার একটি হাসপাতালে ওই স্যালাইন এখনও ব্যবহার করা হচ্ছে। মালদহের ক্ষেত্রে ওই স্যালাইন সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন জেলা শাসক। জেলা স্বাস্থ্য় দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয় যাতে ওই স্যালাইন সরবারব বন্ধ করা হয়।
মোদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্যালাইনকাণ্ডে অসুস্থ ৩ প্রসূতিকে গতকালই আনা হয়েছে কলকাতায়। অভিযোগ, বিষাক্ত স্যালাইন দেওয়ার ফলেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ঘটনার সূত্রপাত বুধবার রাতে। সেদিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সিজার হয়েছিল ৫ প্রসূতির। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। শারীরিক অবস্থায় তখন রীতিমতো আশঙ্কাজনক। ICU-কে স্থানান্তরিত করা হয় ৫ জনকেই। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। শুক্রবার ভোরে মৃত্যু হয় মামণি রুইদাস নামে এক প্রসূতিকে। বুধবার রাতে সিজারের পর পুত্রসন্তানের জন্য দিয়েছিলেন তিনি। এক কন্যাসন্তানও রয়েছে।
মেদিনীপুরে মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন ব্যবহারের অভিযো তুলেছেন রোগীর পরিবারের লোকেরা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ১৩ সদস্যের তদন্তে কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য় দফতর। সূত্রের খবর, তদন্ত কমিটিতে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। যেমন, 'আদৌ নিষিদ্ধ স্যালাইন কি দেওয়া হয়েছিল প্রসূতিকে'? 'অ্যানাসথেসিয়াতে কী কী ওষুধ ব্য়বহার করা হয়েছিল'?কেন 'হাসপাতালে মজুত রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন'?
স্বাস্থ্য় ভবন সূত্রে খবর, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মৃত্যুতে কারণ ২৩৯৬ ব্যাচের রিংগার ল্যাকটেট স্যালাইন। এই ব্যাচের স্যালাইন নাকি দেওয়া হয়েছিল ওই প্রসূতি! অথচ প্রায় ৮ মাস আগেই ২৩৯৬ ব্যাচের রিংগার ল্যাকটেট স্যালাইন উৎপাদন ও সরবরাহ বন্ধের দেওয়া হয় ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে। তাহলে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে কীভাবে ওই স্যালাইন এল? কারা সরবরাহ করল? খতিয়ে দেখছে তদন্ত কমিটি।