• বাঘ ধরার জন্য পাতা হচ্ছে খাঁচা, ঝাড়গ্রামে আতঙ্কের মাঝেও ভিড় মকরমেলায়
    প্রতিদিন | ১৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: বাঘের আতঙ্ক তাড়া করছে ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল এলাকায়। এদিকে সামনেই মকর উৎসব। সেই উপলক্ষে হাটও শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে যথেষ্ঠ দুশ্চিন্তা রয়েছে সাধারণ মানুষের। প্রশাসন ও বন দপ্তরের তরফ থেকেও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেলপাহাড়ির বাঁশপাহাড়ি বনাঞ্চলের মানিয়াড়ি সহ আশেপাশের জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। এই পায়ের ছাপ পাওয়ার পরেই এলাকার মাইকিং করছেন বনকর্মীরা।

    রবিবার সকালে পায়ের ছাপ পাওয়া যায় মনিয়াডির জঙ্গলের রাস্তায়। বিকেলে পায়ের ছাপ মেলে বগডোবার জঙ্গলের রাস্তায়। রাতে বিষ্টা মেলে জুজারধরার কাছে জঙ্গলপথে। বাঘটি এলাকা ধরে হেঁটে বেড়াচ্ছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে। বগডোবা, মনিয়াডি, জুজারধরা এলাকায় ৫০টি নাইট ভিশন ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামের একশোর বেশি বনকর্মীকে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। ওই এলাকায় সুন্দরবনের বনদপ্তরের দলও যাচ্ছে বলে খবর। বাঘ ধরতে খাঁচা পাতার বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে। সেই খাঁচাও নিয়ে আসা হচ্ছে বলে খবর। ওই এলাকায় নিরাপত্তার জন্য প্রচুর পুলিশও মোতায়েন রয়েছে।

    মকর ও টুসু পরব জঙ্গলমহলের একটা বড় উৎসব। এই পরবকে কেন্দ্র করে জঙ্গলমহলের আমজনতার আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তেমনি রুজি-রোজগারের বিষয় থাকে।সারা বছর মানুষজনের বাড়তি আয় হয় এই মেলাগুলি থেকে। ফলে বাঘের আতঙ্কের পাশাপাশি মেলাতেো ভিড় করছেন সাধারণ বাসিন্দারা। মঙ্গলবার ডোমগড়, চিরাকুটি, ধোবাকাচাতে মেলা রয়েছে। বুধবার ঠাকুরানপাহাড়ি, ঘাগরা, কাকরাঝোড় এলাকায় মেলা হবে। বুধবার নারায়ণপুর ও বৃহস্পতিবার বাঁশপাহাড়ি সহ বিভিন্ন এলাকায় মেলা বসবে বলে খবর। এবিষয়ে বামুনডিহা গ্রামের ভবতোষ মাহাতো, কিশোর মাহাতোরা বলেন, “লোকমুখে শুনেছি আমাদের এলাকায় বাঘ এসেছে। ভয় তো আছেই। ঘাগরামেলা আমাদের এলাকার বড় মেলা। সারা বছর ওই মেলার দিকে তাকিয়ে থাকি। মেলায় গেলেও বাঘের আতঙ্কের কারণে থাকতেই ফিরে আসব।”

    বামুনডিহা গ্রামের বাসিন্দা নরহরি বর্মন বলেন, “টুসুমেলা আমাদের বড় প্রিয়। প্রশাসন ও বনদপ্তরের উপরে ভরসা আছে। বাঘ নিয়ে ভয় থাকলেও উৎসবে আমরা সামিল হব।” বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ সিং সর্দার বলেন, “আমরা সবাইকে বলছি, বনদপ্তরের গাইডলাইন মেনে সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরে আসুন। সবাই দলবদ্ধভাবে মেলায় যান। জঙ্গলের রাস্তা এড়িয়ে চলুন। জঙ্গলে যাবেন না। আতঙ্কিত হবেন না। প্রশাসন, বনদপ্তর, পুলিশ সবাই সজাগ আছে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)