বিক্রম রায়, কোচবিহার: বিএসএফের চোখের সামনে পাচার হওয়া একের পর এক গরু নিয়ে পারাপার করছে বাংলাদেশিরা। তবু তাদের আটকানো যাচ্ছে না। সবকিছু দেখেও যেন অসহায় বিএসএফ। অন্যান্য সীমান্তে এই দৃশ্য বিরল হলেও তিন বিঘা করিডরে এটা নিত্যদিনের ঘটনা। তবে কীভাবে এই গরু পাচার হচ্ছে, তার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে চক্ষুচড়ক গাছ। আসলে ভৌগোলিক পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে গরু পাচার চক্রের রমরমা কারবার চলছে বলেই অভিযোগ।
ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশি দু’টি গ্রাম অঙ্গারপাতা ও দহগ্রাম তাদের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সেই ভূখন্ডে যাওয়ার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে তিন বিঘা করিডর দেওয়া হয়েছে। সেটা প্রায় ২৪ ঘন্টায় খোলা থাকে। সেই করিডর দিয়ে যেহেতু বাংলাদেশীদের অবাধ যাতায়াত রয়েছে, তাই সেটাকেই পাচারের জন্য কাজে লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। আর সেখান থেকে প্রকাশ্যে গরু নিয়ে গেলেও তাতে বাধা দিতে পারছে না বিএসএফ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অঙ্গারপোতা ও দহগ্রাম এই দুটি বাংলাদেশি গ্রাম ভারতীয় গ্রামগুলির সঙ্গে লাগোয়া রয়েছে, সেখানে অধিকাংশ এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। পাচারকারীরা সেই কাঁটাতারবিহীন এলাকা দিয়ে কখনও অন্ধকারে কখনওবা বিএসএফের চোখে ধুলো দিয়ে ঘন কুয়াশার সুযোগে এপার থেকে গরু বাংলাদেশি ওই দুটি গ্রামে নিয়ে চলে যাচ্ছে। রাতে সেই গরুগুলি বাংলাদেশের ওই দুটি গ্রামে রাখা হয় এবং সকাল হতেই সেটা তিন বিঘা করিডর দিয়ে রীতিমতো বুক ফুলিয়ে বিএসএফের নজরদারির সামনে দিয়েই বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে পাচার করে দেওয়া হয়। কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় অবাধে চলছে এই পাচার। আর সেই কারণে যখনই গ্রামবাসীরা ওই এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন, সেখানে বাংলাদেশি ওই গ্রামের বাসিন্দা থেকে শুরু করে বিজিবি বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ। যদিও বিএসএফের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সীমান্তে গরু পাচার ঠেকাতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রাতে নাইট ভিশন ক্যামেরা পর্যন্ত ব্যবহার করা হচ্ছে।