• আরজি করে স্থানান্তরিত নব নালন্দার ছাত্র, মঙ্গলবারই রিপোর্ট দেখবে স্কুল শিক্ষা দপ্তর
    এই সময় | ১৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • নব নালন্দা স্কুলের ঘটনায় অবশেষে রিপোর্ট তলব করল শিক্ষা দপ্তর। সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, সকালে দক্ষিণ কলকাতার ওই স্কুল বিল্ডিংয়ের চার তলা থেকে কাচ ভেঙে পড়ার ঘটনায় আহত হয় দুই ছাত্র। একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও, প্রিয়ম দাস নামে অন্য় ছাত্র গুরুতর জখম হয়। প্রথমে তাকে দক্ষিণ কলকাতারই এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে প্রিয়মকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে স্থানান্তরিত করা হয়। তার মাথায় এবং ঘাড়ে মোট ৭টি সেলাই পড়েছে। গোটা ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিল্ডিংয়ের রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অভিভাবকরা। বিক্ষোভও দেখানো হয় প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে।

    বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, ঘটনার পর পরই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে স্কুলশিক্ষা দপ্তর। সেই মতো স্কুলের কাছ থেকে কলকাতা জেলা শিক্ষা বিভাগ জানতে চেয়েছে, ঘটনার পর কী ব্যবস্থা নিয়েছে। স্কুলের তরফে প্রাথমিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে সমস্ত জানালায় নেট লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে।

    নব নালন্দা স্কুলের প্রিন্সিপাল অরিজিৎ মিত্র গোটা ঘটনায় স্কুলের গাফিলতির কথা স্বীকার করলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে তা মানতে নারাজ। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘ফার্স্ট এইড এবং অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা রয়েছে এমন স্কুলগুলির মধ্যে আমরা অন্যতম। সব দুর্ঘটনার উপর সবার সব সময়ে হাত থাকে না। এটি একটি দুর্ঘটনা। স্কুলে রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট তৎপর। আগামিদিনেও রাখব। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর দায়িত্ব আমার। যে জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে নেট লাগানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যাতে এমনটা আর ভবিষ্যতে না ঘটে।’ তাঁর সংযোজন, ‘দোষ যদি কারও হয়ে থাকে, তবে তা আমার। আমাদের একটাই গাফিলতি ছিল, অ্যাম্বুল্যান্স সঠিক সময়ে আসেনি। সে কারণে উত্তেজিত হয়ে পড়েন অভিভাবকেরা।’

    প্রিন্সিপাল অভয় দিলেও অভিভাবকদের আতঙ্ক কাটছে না কিছুতেই। তাঁদের বক্তব্য, ‘স্কুল রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে। ওয়াশরুমে এক ছাত্র বাজি ফাটিয়েছিল। তার পরও পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি স্কুল। ফার্স্ট এইড বক্সে ধুলো পড়ে রয়েছে।‘ তাঁদের আরও অভিযোগ, ‘স্কুল কর্তৃপক্ষ মাইনে বাড়িয়ে যাচ্ছেন, অথচ রক্ষণাবেক্ষণের কোনও বালাই নেই। আমাদের সন্তানদের যদি কিছু হয়ে যায়, কে জবাবদিহি করবে?’ শিক্ষা দপ্তরের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন অভিভাবকদের অনেকেই। এরই পর বিকেলে জানা যায়, রিপোর্ট তলব করেছে শিক্ষা দপ্তর।

    স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিধায়ক দেবাশিস কুমারও। তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। শিক্ষার পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়টিতেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত স্কুল কর্তৃপক্ষের। আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল তাদের।’

    তথ্য় সহায়তা: স্নেহাশিস নিয়োগী

  • Link to this news (এই সময়)