• বাবা ডোম হওয়ায় জুটত অবজ্ঞা, অবশেষে স্কুল পেল ওরা
    এই সময় | ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
  • বাবা পেশায় ডোম। স্কুলের বেঞ্চে গা ঘেঁষে বসতে চাইত না সহপাঠীরা। বিদ্রুপও জুটত মাঝেমধ্যে। ছেলেমেয়েকে মানুষের মতো মানুষ করতে চান বাবা। অস্পৃশ্যতার অন্ধকারে কি ঢাকা পড়ে যাবে শিক্ষার আলো? চিন্তায় ছিলেন নদিয়ার রানাঘাটের বাসিন্দা। কয়েকমাসের টানাপোড়েনের পর ‘নতুন’ স্কুল পেল ওরা। পেল পড়াশোনার সুযোগ। 

    নদিয়ার রানাঘাট-১ ব্লকের কালীনারায়ণপুর শ্মশানের ডোম হিসেবে কাজ করেন ওই ব্যক্তি। তিন ছেলেমেয়ে রয়েছে তাঁর। দুই ছেলে প্রথমে স্থানীয় একটি অঙ্গনওয়াড়ি স্কুলে যেত। এর পর তারা পাহাড়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। সেই স্কুলেই ‘বৈষম্য’ জুটত বলে অভিযোগ। স্কুল পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেন বাবা। যদিও সে অভিযোগ মানতে নারাজ প্রশাসন। 

    এর পর দু’জনকেই স্থানীয় এরান্দপোতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো আবেদন করা হয়। কিন্তু প্রথমে যে স্কুলে তারা পড়াশোনা করত, সেই স্কুলে তাদের দু’জনের নাম নথিভুক্ত ছিল। এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে ভর্তি হতে গেলে যে নিয়ম-কানুন প্রয়োজন তার বেড়াজালে আটকা পড়ে যায় দু’জনেই। স্কুল না গিয়েই কেটে যায় কয়েকমাস। 

    হাল ছাড়েননি বাবা। ওই যে একটাই লক্ষ্য। ছেলেমেয়েকে মানুষের মতো মানুষ করতে হবে। তাঁর পাশে দাঁড়ায় স্থানীয় কিছু লোকজন। এগিয়ে আসে পঞ্চায়েতও। বাধা কাটিয়ে এরান্দপোতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে দু’জনেই। রানাঘাট-১ ব্লকের বিডিও জয়দেব মণ্ডল বলেন, ‘বর্তমানে ওই ব্যক্তির সন্তানরা স্কুলে ঠিকমতো পঠন-পাঠন করছে। বর্তমানে তাদের কোনও সমস্যা নেই বলেই জানতে পেরেছি।’

    কালীনারায়ণপুর পঞ্চায়েতের সদস্য পিঙ্কি দাস বলেন, ‘স্কুল থেকে বাড়ির দূরত্ব বেশ হওয়ায় স্থানীয় এন্দারপোতা প্রাথমিক বিদ্যালয় ভর্তি হতে চেয়েছিল। আগের স্কুল থেকে টিসি দেওয়া হয়নি বলে সমস্যা হচ্ছিল। এখন সমস্যা মিটে গিয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)