সংবাদদাতা, ময়নাগুড়ি: বাংলা আবাস যোজনার টাকা পেয়ে ঘর নির্মাণ শুরু করেছিলেন। কিন্তু সোমবার সকালে সেই ঘর ভেঙে দিল আরপিএফ। আর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় ময়নাগুড়ি ব্লকের দোমোহনিতে। ঘর ভাঙায় রেলের আধিকারিকদের সামনেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসেন ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষ সহ পুলিস আধিকারিকরা। রেল জানিয়েছে, তাদের জমিতে নতুন করে কোনও নির্মাণ তুলতে দেওয়া হবে না। তাই নতুন নির্মাণ ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের দাবি, কোনও নোটিস না দিয়েই হঠাৎ করে আরপিএফ তাঁদের নির্মাণ গুঁড়িয়ে দিয়েছে। যদিও রেলের দাবি, সরকারি জায়গার নির্মাণ কাজ চলছিল। গ্রামবাসীদের মৌখিকভাবে আগেই সরাতে বলা হয়েছিল। এরপরেও তাঁরা কাজ করায় এদিন ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ময়নাগুড়ি ব্লক অফিস সূত্রে থেকে জানা গিয়েছে, ব্লকে ৩৮১৪ জন আবাসের টাকা পেয়েছেন। তাঁরা কাজও শুরু করেছেন। প্রথম ধাপে ৬০ হাজার টাকা উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে।
সোমবার দোমোহনিতে আরপিএফ চারটি ঘর ভেঙে দেয়। এদিকে, এমনটা দেখে মহম্মদ ফারুক নামে এক যুবক আতঙ্কে নিজের বাড়ি নিজেই ভেঙে ফেলেন। ঘর ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রামবাসীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। রাতে কোথায় থাকবেন, চিন্তায় পড়েন তাঁরা। আবাসের টাকা পাওয়া সুভাষ চন্দ বলেন, বাড়ি নির্মাণের জন্য রাজ্য থেকে ৬০ হাজার টাকা পেয়েছি। দেওয়াল দেওয়ার কাজ করছি। এদিন রেলের লোকজন এসে সেই ঘর ভেঙে দেয়। রেলের জায়গা বুঝলাম, কিন্তু আমাদের কোনও সময় দেওয়া হল না। বহুদিন ধরে এখানেই থাকছি। ছায়ারানি সরকার নামে আরও এক উপভোক্তা বলেন, রেলের লোকজন আমারও ঘর ভেঙে দিয়েছে। রাতের কোথায় থাকব, জানি না।
এ বিষয় আরপিএফের ইন্সপেক্টর অব ওয়ার্কস অমিত কুমার বলেন, রেলের জমিতে নতুন কোনও পরিকাঠামো করতে দেওয়া হবে না। নতুন পরিকাঠামো ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পুরনো ঘরে হাত দেইনি। রেলের জমিতে ঘর নির্মাণের টাকা আসতে পারে না। মৌখিকভাবে জানিয়েই এদিন অভিযান চালানো হয়েছে।
ময়নাগুড়ির বিডিও প্রসেনজিৎ কুণ্ডু বলেন, রেলের জায়গায় আবাসের টাকা দেওয়া হয়নি। উপভোক্তারা অন্য জায়গা দেখিয়ে রেলের জমিতে ঘর তুললে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।