সরাসরি চাষির থেকে ধান ক্রয়ে রেকর্ড গড়তে চলেছে খাদ্যদপ্তর
বর্তমান | ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সরাসরি চাষির কাছ থেকে ধান কেনার ক্ষেত্রে এবার রেকর্ড করতে চলেছে রাজ্য সরকার। জানুয়ারি মাসের অর্ধেকও এখনও পেরয়নি। তারই মধ্যে চলতি ২০২৪-২৫ খরিফ মরশুমে প্রায় ৩৫ লক্ষ টন ধান কেনা হয়েছে। আগে কখনও এত বেশি পরিমাণে ধান এইসময়ের মধ্যে কেনা হয়নি বলে জানিয়েছে রাজ্য খাদ্যদপ্তর। জানুয়ারির মধ্যে মোট ধান কেনার পরিমাণ ৪০ লক্ষ টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে তারা। সাধারণত প্রতি খরিফ মরশুমে ৫৫ লক্ষ টনের আশপাশে ধান কিনে থাকে সরকার। এবার তার চেয়ে বেশি ধান কেনা হবে বলে আশা করছে দপ্তর। খরিফ মরশুম শুরু হয় নভেম্বর মাস থেকে। নতুন ধান ওঠার পর, ডিসেম্বর থেকে কেনার পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। রাজ্যজুড়ে ফেব্রয়ারি-মার্চ মাস পর্যন্ত বেশি পরিমাণে ধান কেনা হয়।
স্বচ্ছতা বজায় রেখে প্রকৃত চাষির কাছ থেকে ধান কেনার জন্য এবার বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। খাদ্যশ্রী ভবন থেকে নিয়মিত মনিটরিং চলছে। পাশাপাশি কিছু সিনিয়র অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলাভিত্তিক নজরদারির জন্য। চাষিদের তরফে বেচতে আনা ধান থেকে বেশি ‘খাদ’ বাদ দেওয়া নিয়ে, কিছুদিন আগে এক প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী অসন্তোষ ব্যক্ত করেন। তারপরই মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ নবান্নে বিশেষ বৈঠক ডেকে এই ব্যাপারে গাইডলাইন জারি করেন এবং তা মেনে চলার জন্য জেলার অফিসারদের নির্দেশ দেন।
খাদ্যদপ্তর সূত্রের খবর, তারপর থেকে ধান বাদ দেওয়া সংক্রান্ত অভিযোগ চাষিদের কাছ থেকে তেমন আসেনি। ধানক্রয় প্রক্রিয়ায় দালালচক্র যোগের অভিযোগও এবার নগণ্য। ইতিমধ্যে ১০ লক্ষাধিক চাষি সরকারের কাছে ধান বেচেছেন। নাম নথিভুক্ত করেছেন মোট প্রায় ২০ লক্ষ চাষি। ধান বিক্রির পর চাষিদের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে যাচ্ছে দ্রুত। ওই ধানের দাম রাজ্য সরকারই মেটাচ্ছে নিজের টাকায়। ধানক্রয় এবং চাল উৎপাদনের খরচের বেশিরভাগটাই কেন্দ্রের দেওয়া কথা। কিন্তু চলতি খরিফ মরশুমের টাকা দেওয়া তো দূরের কথা, কেন্দ্রের কাছে আগের ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজ্য সরকারের পাওনা রয়েছে। রাজ্য সরকার সম্প্রতি চাল উৎপাদনের জন্য রাইস মিল মালিকদের মিলিং চার্জ প্রতি কুইন্টালে ১০ টাকা বাড়িয়েছে। মিল মালিক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি আব্দুল মালেক এজন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, ‘উৎপাদিত চাল রাজ্য সরকার মিলগুলি থেকে দ্রুত সংগ্রহ করে নিলে আমাদের কাজের সুবিধা হবে।’