গরহাজির! হাঁসখালি ধর্ষণে সিবিআইয়ের দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু
বর্তমান | ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: সাক্ষ্যগ্রহণ এবং শুনানির জন্য হাজিরার নোটিস দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও কোর্টে উপস্থিত হলেন না সিবিআইয়ের দুই পদস্থ আধিকারিক। এমনকী অনুপস্থিতির জন্য উপযুক্ত কারণ জানিয়ে কোনও চিঠিও দেননি। তার জেরে সোমবার বড়সড় মোড় নিল হাঁসখালি ধর্ষণকাণ্ড। শুনানিতে গরহাজির সিবিআইয়ের দুই কর্তার বিরুদ্ধেই ওয়ারেন্ট ইস্যু করল রানাঘাট আদালত। তাঁরা হলেন, অতিরিক্ত সুপার এম আর হজং এবং ডিএসপি অভয় কুমার। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসারদের এহেন আচরণ আইনের চোখে সাধারণত ‘আদালত অবমাননা’ হিসেবেই গণ্য হয়। অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক সৌমেন গুপ্ত। বিষয়টি নিয়ে এজলাসে থাকা সিবিআইয়ের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেও জবাব মেলেনি। এরপরেই বিচারক সরাসরি দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ওয়ারেন্ট জারি করেন। স্বাভাবিকভাবেই বেনজির এই সিদ্ধান্তে তোলপাড় শুরু হয়েছে আইনি মহলে।
২০২২ সালের ৪ এপ্রিল নদীয়ার হাঁসখালি থানা এলাকায় এক নাবালিকাকে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ উঠে। প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করে রাজ্য পুলিস। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই গ্রেপ্তার করা হয় মূল অভিযুক্ত সোহেল গয়ালি ওরফে ব্রজ এবং প্রভাকর পোদ্দারকে। পরবর্তীকালে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটি তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। তারা আবার এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করে রঞ্জিত মল্লিক, দীপ্ত গয়ালি, আকাশ বাড়ুই, পীযূষকান্তি ভক্ত, অংশুমান বাগচী, সমরেন্দু গয়ালি ও এক কিশোরকে। ৮৫ দিনের মাথায় রানাঘাট আদালতে ২০৯ পাতার চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। তাতে অবশ্য প্রভাকর ও ব্রজর পাশাপাশি মূল অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয় রঞ্জিতকেও। সিবিআই তদন্ত এখনও জারি। এসবের মধ্যেই রানাঘাট মহকুমা আদালতে চলছে হাঁসখালি কাণ্ডের শুনানি।
এদিন সাক্ষ্যগ্রহণ এবং শুনানির জন্য কোর্টের তরফে আগে থেকেই নোটিস পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে। সেই নোটিস তারা রিসিভও করে। কিন্তু তারপরেও নির্দিষ্ট সময়ে এজলাসে হাজির হননি সিবিআইয়ের অতিরিক্ত সুপার এম আর হজং এবং ডিএসপি অভয় কুমার। অনুপস্থিতির কারণ জানিয়ে কোনও চিঠিও দেননি। কেন তাঁরা এলেন না? বিচারকের এই প্রশ্নের সামনে নীরব ছিলেন তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। তারপরই বেনজির ভাবে দুই অফিসারের নামে জামিনযোগ্য ওয়ারেন্ট জারি হয়। বিষয়টি নিয়ে পরেও মুখ খোলেননি সিবিআইয়ের আইনজীবী পঙ্কজ গুপ্তা। অভিযুক্ত প্রভাকর পোদ্দারের আইনজীবী রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘হাঁসখালি মামলার রায়ের দিকে গোটা দেশ তাকিয়ে, তার শুনানি পর্বে সিবিআইয়ের পদস্থ আধিকারিকরাই সাক্ষী দেওয়ার জন্য উপস্থিত থাকছেন না। তাঁরা কি নিজেদের আদালতের ঊর্ধ্বে বলে মনে করছেন?’