এই সময়, কোচবিহার: ম্যারাথনে দৌড়তে গিয়ে ছাত্রের মৃত্যুর পরে নতুন ‘বিপদ’ উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সোমবার সকালে কোচবিহারের পুণ্ডিবাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে একের পর এক ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়লে ছুটোছুটি শুরু হয়ে যায়। সব মিলিয়ে সাত জন ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে বর্তমানে তিন জনকে কোচবিহারের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার ম্যারাথনে দৌড়নোর সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র রিয়াশ রাই–এর মৃত্যু হয়। তার পরেই এক অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। সহপাঠীর আকস্মিক মৃত্যুতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ছাত্রদের একাংশের মধ্যে। আর সেখান থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা বলে মনে করছেন চিকিৎসক।
অধ্যাপক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, অভিভাবক সকলেই চিন্তায় পড়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক তথা স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ারের ডিন নৃপেন্দ্র লস্কর জানিয়েছেন, কয়েকজন ছাত্র অসুস্থ হয়েছিল। তার মধ্যে তিন জনকে ভর্তি করা হয়েছে। তারা অবজারভেশনে রয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, তাদের অ্যাংজাইটি রয়েছে। কাউন্সেলিং করানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
রবিবার ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রিয়াশ। তারপর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের নতুন বিপদের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ দিন সকাল দশটা নাগাদ প্রথম বর্ষের সাত জন ছাত্র হস্টেলে অচৈতন্য হয়ে পড়ে। কথা বলার পরিস্থিতি ছিল না তাদের। ঘটনায় হইচই পড়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এক প্রকার সংজ্ঞাহীন অবস্থায় প্রথমে তাদের পুণ্ডিবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিন জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও বাকি চার জনকে কোচবিহারের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে আসা হয়। সেখানে পরবর্তীতে আরও একজন কিছুটা সুস্থ হলে তাকেও ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে রোহিত কুমার বারুই, সৌম্য দিন্দা এবং সুমন গোস্বামীকে ভর্তি করানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ দিন একটি স্বাস্থ্য শিবির করা হয়। সেখানে প্রথম বর্ষের ৭০ জন ছাত্রের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে সহপাঠীর মৃত্যু কোন ভাবে মেনে নিতে পারছে না পড়ুয়ারা। অনেকে ভয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে। হঠাৎ করি এই ঘটনায় নাড়িয়ে দিয়েছে সকলকে। জানা গিয়েছে, মৃত রিয়াশ সকলের সঙ্গে গল্প করত। নিজে নিরামিষ খাবার খেলেও অন্যদের কোনও অসুবিধা করত না। অন্য দিকে, বাবার অপেক্ষায় গোরুবাথানের বাড়িতে মৃত ওই ছাত্রের দেহ সোমবারও রেখে দেওয়া হয়েছে।
মৃত রিয়াশের এক আত্মীয় মেঘনাথ রাই বলেন, ‘ওর বাবা দুবাইতে থাকে। তিনি রওনা দিয়েছেন। বাবা ফিরলেই মঙ্গলবার ওর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।’ কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপি সৌরদীপ রায় জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তে রিপোর্ট এখনও আসেনি। এলে নিয়ম মেনে পুলিশের কাছে পাঠানো হবে।