বক্রেশ্বর মহাশ্মশানে ২টি ছাউনিযুক্ত চুল্লি তৈরিতে ১৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ
বর্তমান | ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, সিউড়ি: বক্রেশ্বর মহাশ্মশানে নদীবক্ষেই চলছে মৃতদেহ সৎকার। এর জেরে বক্রেশ্বর নদী দূষিত হচ্ছে। এবার সেই দূষণ রুখতে বীরভূম জেলা পরিষদ উদ্যোগী হয়েছে। শ্মশানে দু’টি ছাউনিযুক্ত চুল্লি তৈরি করতে প্রয়োজনীয় টাকা বরাদ্দ হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হতে চলেছে।
জেলা পরিষদ জানিয়েছে, নদীর ধারে বক্রেশ্বর মহাশ্মশানে দু’টি বার্নিং শেড তৈরি করা হবে। এজন্য প্রায় ১৮লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। শ্মশান লাগোয়া বক্রেশ্বর নদীতে শ্মশানযাত্রীদের স্নান ও অন্য কাজকর্মের জন্য একটি বাঁধানো ঘাট তৈরির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। সেই ঘাট তৈরির জন্য ৩ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হবে।
জেলার দুবরাজপুর ব্লকের গোয়ালিয়ারা পঞ্চায়েতে পড়ে বক্রেশ্বর পীঠস্থান। এখানেই নদীর ধারে বক্রেশ্বর মহাশ্মশান রয়েছে। সেখানে প্রতিদিন বহু মানুষ দেহ সৎকার করতে আসেন। কিন্তু শ্মশানে শবদাহের নির্দিষ্ট জায়গা থাকলেও বহু মানুষ নদীবক্ষেই শবদাহ করেন। দীর্ঘদিন ধরে নদীবক্ষে শবদাহের জেরে দূষণ বাড়ছে। বর্ষায় নদীতে জল বাড়লে শবদাহ করার সামগ্রী ভেসে অন্যত্র চলে যায়। কয়েকবছর আগে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এখানে একাধিক ঢালাই রাস্তা, প্রতীক্ষালয়, ‘বৈতরণী’ প্রকল্পে শবদাহের কাঠের চুল্লি তৈরি হয়েছে। কিন্তু ওই চুল্লি কেউ ব্যবহার করেন না। শ্মশানযাত্রীদের অভিযোগ, ওই চুল্লিতে শবদাহ করতে অনেক বেশি কাঠের প্রয়োজন হয়।
দিনের পর দিন শবদাহের পর বাঁশ, কাঠ, মাচা, মৃতদেহের শয্যার জিনিসপত্র, ফুলমালা নদীতেই নিক্ষেপ করে চলে যাচ্ছেন শ্মশানযাত্রীরা। দাহকার্য শেষে পোড়া কাঠের টুকরো, ছাই সবই নদীর জলে গিয়ে মেশে। বর্ষার সময় সেসব নদীর জলে ভাসতে ভাসতে অন্যত্র পৌঁছে যায়। সেজন্য শ্মশানযাত্রীদের দাবি মেনে সেখানে দু’টি বার্নিং শেড তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা পরিষদ।
দুবরাজপুরের শ্মশানযাত্রী কাঞ্চন মণ্ডল বলেন, এই শ্মশানটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এখানে শবদাহ করতে আসেন। ছাউনিযুক্ত চুল্লি হলে খুব ভালো হবে। বর্ষার সময় শবদাহে সমস্যা হবে না।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ বলেন, নদীতে শবদাহ করার জেরে নদী দূষিত হচ্ছিল। তাই সেখানে একটি স্থায়ী ছাউনিযুক্ত চুল্লি তৈরি ও নদীঘাট বাঁধানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর জন্য প্রয়োজনীয় টাকা বরাদ্দ হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হবে।