• পাউরুটিতে আগাম ডেট, তাজ্জব আধিকারিকরা
    বর্তমান | ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: শহরের একাধিক বেকারিতে হানা দিয়ে প্রচুর বাসি ও পচা কেক নষ্ট করলেন খাদ্য সুরক্ষা ও ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা। সোমবার তাঁরা জলপাইগুড়ি শহরের বাবুপাড়া, নয়াবস্তি সহ একাধিক এলাকায় হানা দেন। 


    শহরের একটি বেকারিতে আচমকা অভিযানে গিয়ে রীতিমতো তাজ্জব হয়ে যান আধিকারিকরা। দেখা যায়, ওই বেকারিতে যেখানে কেক, বিস্কুট, পাউরুটি তৈরি করা হচ্ছে, জায়গাটি অত্যন্ত নোংরা। শুধু তাই নয়, ভিতর থেকে পচা কেকের দুর্গন্ধ আসছে। আধিকারিকদের নজরে পড়ে, বেকারির এক জায়গায় বেশকিছু পচা কেক রেখে দেওয়া হয়েছে। এরপরই সেখানে থাকা একটি আলমারি খুলতে বাধ্য করা হয় কর্তৃপক্ষকে। সেখানেও কয়েকশো বাসি কেক রেখে দেওয়া হয়েছিল। নষ্ট না করে কেন ফেলে রেখে দেওয়া হয়েছিল, টাটকা কেকের সঙ্গে মিশিয়ে সেগুলি দোকানে পাঠানোর মতলব ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন করেন আধিকারিকরা। বেকারি কর্তৃপক্ষ অবশ্য সাফাই দেয়, নষ্ট করে ফেলার জন্যই আলাদা করে রেখে দেওয়া হয়েছিল ওই কেকগুলি। যদিও তাদের এমন দায়সারা উত্তরে মোটেই খুশি হননি আধিকারিকরা। 


    এদিনের অভিযানে জলপাইগুড়ি শহরের বেকারিতে পাউরুটি প্যাকেজিংয়ের সময় আগাম তারিখ বসিয়ে দেওয়ার বিষয়টিও নজর এড়ায়নি আধিকারিকদের। দেখা যায়, ১৩ জানুয়ারি পাউরুটির প্যাকেজিং হলেও সেখানে ১৪ তারিখ বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই কারচুপি নিয়ে ধমক দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট বেকারি কর্তৃপক্ষকে। কোথাও আবার দেখা যায়, কেক তৈরি হলেও তাতে কোনও তারিখ বসানো হচ্ছে না। ফলে সেটি কবে তৈরি হয়েছে, তার এক্সপেয়ারি ডেট কবে, তার কোনও প্রমাণ নেই। এক্ষেত্রেও চরম সতর্ক করা হয় বেকারি মালিককে। যদিও বিষয়টি নিয়ে তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।


    ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের সহকারী অধিকর্তা দেবাশিস মণ্ডল বলেন, শহরের এদিন একটি বেকারিতে হানা দিয়ে প্রচুর বাসি ও পচা কেক উদ্ধার করা হয়েছে। যতটা সম্ভব হয়েছে, আমরাই সেগুলি নষ্ট করে দিয়েছি। বাকিটা দ্রুত ফেলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। বাবুপাড়া এলাকায় একটি বেকারিতে গিয়ে দেখা যায়, যেখানে কেক তৈরি হয়, সেই জায়গাটি অত্যন্ত নোংরা। এনিয়ে কর্তৃপক্ষকে ধমক দেওয়া হয়েছে। তারা যদি ঠিকমতো বেকারি না চালায়, তাহলে নোটিস ধরানো হবে। তিনি বলেন, পাউরুটিতে আগাম ডেট দিয়ে দেওয়া কিংবা কেক, বিস্কুটে প্যাকেটের গায়ে তৈরির ডেট না লেখা মারাত্মক অপরাধ। যারা এ ধরনের কাজ করছে, তাদের চরম সতর্ক করা হয়েছে। জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। 


    জলপাইগুড়ি সদর ব্লকে ২২টি বেকারি রয়েছে। সবক’টিতেই লিগ্যাল মেট্রলজি, ফুড সেফ্টি এবং ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের অভিযান হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)